নাড়ু-তক্তি চুরি করে খেতাম: জ্যোতি

238

বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক

ময়মনসিংহ সদরে আমার বোনের বাসা। বোনের ছোট ছোট বাচ্চা আছে, ওদের কাছে না গেলে পূজার আনন্দ পাই না। গত দুই বছর পূজায় ওদের সঙ্গে থাকতে পারিনি। তাই এবার ওদের সঙ্গে আছি। গত ২৩ অক্টোবর এসেছি। এদিকে কাজেরও অনেক চাপ। কিন্তু ওদের জন্য ময়মনসিংহে আসতেই হলো। ইচ্ছে আছে দশমীর দিন রমনা কালী মন্দিরে যাবো। ওখানে সিঁদুর খেলা দেখবো।

পূজা শৈশবেও হয়েছে, এখনো হয়। বরং আরো জাঁকজমকভাবে হয়। কিন্তু পূজা উপলক্ষে শৈশবে যে অপেক্ষা ছিল তা এখন নেই। অর্থাৎ কবে পূজা আসবে, নতুন জামা কিনবো, মজার সব খাবার খাবো- এসবের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষা ছিল। আরো বেশি আনন্দ লাগতো পূজার সময় ছুটি পেতাম। পড়াশোনার চাপ নেই- এগুলো আনন্দে ভিন্ন মাত্রা যোগ করতো। শৈশবের পূজা শুধুই আনন্দের ছিল। এখন আনন্দের পাশাপাশি দায়িত্বের। অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। কারণ ছোটরা এখন আনন্দ করবে, এটাই তো নিয়ম!

ছোটবেলায় বেশিরভাগ পূজা মামাবাড়িতে করতাম। আমাদের দুই বোনকে একই রকমের জামা কিনে দিতেন মামা। সারাদিন সেই জামা পরে মণ্ডপে ঘুরে বেড়াতাম। ছোটবেলা থেকেই মিষ্টি জাতীয় খাবার খুব পছন্দ করি। পূজার সময় পায়েশ বা মিষ্টি জাতীয় খাবার তো খেতামই, কখনো কখনো নাড়ু-তক্তি চুরি করে খেতাম। যদিও এখন সেইসব স্মৃতি মনে পড়লে হাসি পায়।

ছোটবেলায় পূজাকে ঘিরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হতো। যেমন: কবিতা, গান ইত্যাদি। ওই সময়ে সাউন্ড সিস্টেম বলতে শুধু মাইক ছিল। পূজায় ধুপদানি হাতে নিয়ে ঢাকের বাদ্যের তালে তালে আরতি নৃত্যের আয়োজন করা হতো। এই নৃত্য কে কতটা ভালো পারে তা নিয়েও প্রতিযোগিতা হতো। প্রতিযোগিতার পুরস্কারগুলো বেশ আকর্ষণীয় ছিল। উপহার হিসেবে সাবান, আলতা দেওয়া হতো। আমি খুবই লাজুক স্বভাবের ছিলাম। স্বাভাবিক কারণে এসব প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম না। কিন্তু খুব উপভোগ করতাম। আর দেখতাম কে কে পুরস্কার পেল।

বড়বেলার পূজার কথা যদি বলি, তবে কলকাতার পূজা আমার খুব ভালো লাগে। কারণ ওদের পূজামণ্ডপ। ওদের পূজার প্যান্ডেলগুলো শিল্পে ভরপুর। বাংলাদেশেও ওদের মতো সুন্দর করে পূজার আয়োজন করার ইচ্ছে আছে। সময় সুযোগ হলে করবো!