দিল্লিকে বিধ্বস্ত করে ফাইনালে মুম্বাই

113

বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক

গতবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ানস চ্যাম্পিয়নের মতো খেলেই উঠে গেল ফাইনালে। প্রথমে ব্যাটিংয়ে যাওয়া রোহিত শর্মার দল ৫ উইকেটে করেছিল ২০০ রান। পরে তারা দিল্লি ক্যাপিটালসকে থামিয়ে দিয়েছে ১৪৩ রানে। ৫৭ রানের বিশাল এই জয় লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে তাদের ১০ উইকেটে হারের যন্ত্রণায় নিশ্চয়ই একটু প্রলেপ বুলিয়েছে।

দুবাই ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার এই ম্যাচ হয়তো মুম্বাইয়ের একটু পরীক্ষাই নিতে চেয়েছিল। সেকারণেই হয়তো টসটা হেরে রোহিতের দলকে যেতে হয় ব্যাটিংয়ে। কিন্তু পরীক্ষা আর হলো কই? ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারে দিল্লির সেরা বোলার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ওপেনার রোহিতকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন শূন্য রানে। ওই পর্যন্তই। তারপর যতই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন দিল্লির বোলাররা, ততই মুম্বাই ব্যাটসম্যানদের ব্যাট চওড়া হয়ে জবাব দিয়েছে। প্রথমে কুইন্টন ডি কক(৪০), পরে সুরিয়াকুমার যাদব (৫১), পরে ঈশান কিষাণ ও হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাট তরবারি হয়ে উঠেছে।

দলকে ২০০ রানে পৌঁছে দেওয়ার মূল কৃতিত্ব কিষাণ ও হার্দিক পান্ডিয়ার অবিচ্ছিন্ন ৬০ রানের জুটি। ২৩ বলের জুটিতে হার্দিকের অবদান ১৪ বলে ৫ ছক্কায় করা ৩৭ রানের। ৩০ বলে গড়া কিষাণের অপরাজিত ৫৫ রানের ইনিংসটিতে ৪টি চারের সঙ্গে ছিল ৩ ছক্কা। শেষ তিন ওভারে ড্যানিয়েল স্যামস, কাগিসো রাবাদা ও আনরিখ নর্কিয়াকে পিটিয়ে ৫৫ রান তুলেছেন দুজন। এমন বেধড়ক পিটুনির মধ্যেও চার ওভারে ২৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন অফস্পিনার অশ্বিন।

শিশির ভেজা মাঠে পরে বোলিং করাটা বিরাট চ্যালেঞ্জ। কিন্তু ভয়ঙ্কর মুম্বাই সেই চ্যালেঞ্জ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে দুই ওভারের মধ্যেই। বাঁহাতি কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট প্রথম ওভারেই নেন দুই উইকেট। যশপ্রীত বুমরা দ্বিতীয় ওভারে বোল্ড করেন এবারের আইপিএলে টানা দুটি সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া শিখর ধাওয়ানকে। শূন্যরানেই তিন উইকেট খোয়ানো দিল্লির আর কোনও টেনশন ছিল না। তাদের ১৪৩ পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেছেন মূলত মার্কাস স্টয়নিস। অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার ৪৬ বলে ৬৫ করে বোল্ড হয়েছেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ বুমরার বলে। ৪১/৫ অবস্থায় স্টয়নিসের সঙ্গে অক্ষর প্যাটেল জুটি বেঁধে যোগ করেছেন ৭১ রান। ৩৩ বলে ৪২ করে কাইরন পোলার্ডের বলে রাহুল চাহারের হাতে অক্ষর ক্যাচ হয়েছেন ম্যাচের দ্বিতীয় শেষ বলে। লং অনে চতুর্থ প্রচেষ্টায় ক্যাচটি হাতে জমাতে না পারলে চাহার আরও যন্ত্রণায় পুড়তেন। মুম্বাইয়ের ‘নির্মম’ পারফরম্যান্সের রাতে একমাত্র কালো দাগ এই লেগির বোলিং । দুই ওভারে ৩৫ রান দিয়েছেন চাহার!

মুম্বাই টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে, ১০ নভেম্বরে শিরোপার লড়াইয়ে কে তাদের সামনে দাঁড়াবে সেই অপেক্ষায় থাকবে তারা আগামী তিনদিন। দিল্লিরও ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। আগামীকাল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও র‌য়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের মধ্যকার এলিমিনেটর ম্যাচের বিজয়ীর সঙ্গে দিল্লি ৮ নভেম্বর মুখোমুখি হবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। তাতে জিততে পারলেই ফাইনাল। যে ফাইনাল তাদের জন্য এই ৫৭ রানের পরাজয়ের প্রতিশোধ এবং প্রথম শিরোপা জয়ের আরেকটি সুযোগ। কিন্তু প্রবল প্রতাপশালী মুম্বাই কি সে সুযোগ দেবে?

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মুম্বাই: ২০ ওভারে ২০০/৫(কিষাণ ৫৫*, সুরিয়াকুমার ৫১, ডি কক ৪০, হার্দিক ৩৭*, অশ্বিন ৩/২৯, স্টয়নিস ১/৫) ও দিল্লি: ২০ ওভারে ১৪৩/৮ (স্টয়নিস ৬৫, অক্ষর ৪২, বুমরা ৪/১৪, বোল্ট ২/৯)