শাজাহানপুরে আজ ভয়াল সেই ১১নভেম্বর

259

শাজাহানপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ আজ ভয়াল সেই ১১নভেম্বর। ১৯৭১সালে সেদিন ছিলো ২৭রমজানের মহিমান্বিত রাত। মুক্তি যুদ্ধ চলাকালিন সময়ে আজকের ভোরে বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার খড়না ইউনিয়নের বাবুর পুকুরে অনেক মুক্তি যোদ্ধাকে গুলি করে হত্যার পর ফেলে রেখেছিলো কালো পোশাক ধারী পাকিস্থানী সেনা বাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার ও আল বদর বাহিনী। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ে বগুড়া জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০০৯সালে এখানে নির্মিত হয় মুক্তি যুদ্ধের বিরল স্বাক্ষী বাবুর পুকুর বধ্য ভূমি সৃতিসৌধ। প্রতিদিনই এখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন দেখতে আসেন। বদ্ধ ভূমি সৃতি সৌধের জমি দান করেন ওই এলাকার এ্যাডভোকেট আফতাফ উদ্দীন আহম্মেদ, আলতাফ হোসেন এবং এ্যাডভোকেট রাশেদুর রহমান মরিশ।
সেদিনের শহীদ মুক্তি যোদ্ধাদের মধ্যে পরিচয় পাওয়া গেছে সাইফুল ইসলাম, জালাল উদ্দীন জালাল, আব্দুল কুদ্দুস মন্টু, আব্দুল কাদের বাদশা, বাচ্চু শেখ ওরফে বাচ্চা মিয়া, আব্দুল মান্নান ওরফে মান্না, আলতাফ আলী আলতাফ, আব্দুস ছবুর ওরফে ভোলা, নুরজাহান আলী লক্ষী, মোফাজ্জল হোসেন, আব্দুল হান্নান, ওয়াজেদুর রহমান টুকু, ফজলুর রহমান খান ফজলু। সেদিন শহীদ হওয়া অনেকের নাম এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নাই। এদের মধ্যে নুরজাহান আলী লক্ষী ছিলেন হিন্দু। তোতা মিয়া নামের এক মুক্তি যোদ্ধাকে ভালোবেসে মুসলমান হয়ে বিয়েও করেছিলেন। পাকিস্থানী সেনাবাহিনী তোতা মিয়াকে ধরতে গিয়ে না পেয়ে লক্ষীকে ধরে এনেছিলো।
ফজরের আযানের কিছুক্ষন পরে মুহুম্র্ূহ গুলিশের শব্দে কেঁপে ওঠে পুরো গ্রাম। সবাই যে যার মত পালাতে থাকে। ওই গ্রামের এক দুরন্ত কিশোর রাশেদুর রহমান মরিস অন্যদের মত জেগে ওঠেন। তবে তিনি না পালিয়ে গুলির শব্দ থামা মাত্র বাবুর পুকুরের দিকে এগিয়ে যান। ততক্ষনে পাকিস্থানীরা চলেগেছে। দেখতে পান পুকুরের পাড়ে আর পানিতে লাশ আর রক্ত। নিথর দেহ থেকে তাজা রক্ত গড়িয়ে পুকুরের পানিতে জমাট বাঁধছে। সেই দুঃসহ সৃতি তাকে আজো তাড়া করে। সৃতি সৌধের জমিদাতাতের মধ্যে তিনিও একজন।