আন্তর্জাতিক কিডনি পাচার চক্র গাইবান্ধায়!

230

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

ওষুধ কম্পানিতে চাকরি দেওয়ার কথা বলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মো. আবদুল ওয়াহাব (২২) নামের এক যুবককে ভারতে পাচার করে আন্তর্জাতিক কিডনি পাচার চক্রের সদস্যরা। ওই যুবককে কুমিল্লার বিবির বাজার স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পাচার করা হয়। ভারতে পাচারের পর ওয়াহাবকে হত্যার ভয় দেখিয়ে অপারেশনের মাধ্যমে তাঁর শরীর থেকে একটি কিডনি বের করে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় জড়িত গুরুত্বপূর্ণ এক আসামিকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বিষয়টি জানা গেছে। ওহায়াব গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ছোট সোহাগী গ্রামের আবদুল মজিদ সরকারের ছেলে।

গতকাল সোমবার দুপুরে গাইবান্ধায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। এ সময় ভুক্তভোগী ওয়াহাবও উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘গোবিন্দগঞ্জের ছোট সোহাগী গ্রামের রংমিস্ত্রি আবদুল ওয়াহাবের সঙ্গে একই এলাকার পশ্চিম বানিহালির নুর আলমের ছেলে মো. রাকিবুল হাসানের পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা হয়। ওয়াহাবকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রাকিবুল ২০১৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। সেই থেকে তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। এর মধ্যে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থেকে রাকিবুলকে আটক করা হয়। আটকের পর সে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে, একজন ‘ডিলার’ ও ওয়াহাবকে কিডনি পাচারকারীচক্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’
ওয়াহাবের বাবা আবদুল মজিদ সরকার গোবিন্দগঞ্জ থানায় অভিযোগ করলে ২০১৯ সালের ২৮ জুলাই পিবিআই তদন্তভার গ্রহণ করে। কিডনি পাচার চক্রের আরেক সদস্য মো. রায়হান আলীকে গত শুক্রবার গ্রেপ্তারের পর গত রবিবার আদালতে হাজির করলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সে জানায়, ওয়াহাবকে সান এন্টারপ্রাইজের মালিক কবীরের মাধ্যমে ভারতে পাঠানো হয়। কবীরের সঙ্গে ওয়াহাবের পাঁচ লাখ টাকায় কিডনি দেওয়ার রফা হয়। তবে ভারতে কিডনি নেওয়ার পর তাঁকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করা হয়।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘এ ঘটনায় এজাহারভুক্ত চার আসামি থাকলেও আর কাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পিবিআইয়ের তদন্তে জানা গেছে, গত কয়েক বছরে গাইবান্ধা, জয়পুরহাট এবং আশপাশের এলাকা থেকে অন্তত ৫০ জনকে পাচার করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক কিডনি পাচারকারীচক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গরিব অসহায়, অশিক্ষিত লোকদের মোটা অঙ্কের টাকায় কিডনি বিক্রির লোভে ফেলে।’ তবে ওয়াহাব তাঁর বক্তব্যে জানান, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে তাঁকে কৌশলে ভারতে পাঠিয়ে সেখানে একটি হাসপাতালে কিডনি বের করে নেয় পাচারকারীরা। তাঁর দাবি, চক্রটি তাঁর কিডনি ৩০ লাখ টাকা বিক্রি করেছে।

সুত্র কালের কন্ঠ