ভাষাণচরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বন্ধের আহ্বান অ্যামনেস্টির

127

বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, বঙ্গোপসাগরে ভাষাণচরে শতাধিক রোহিঙ্গা পরিবারকে পুনর্বাসন করার পরিকল্পনা পরিত্যাগ করতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে। কারণ, এখনও জাতিসংঘ ওই দ্বীপটিকে মানব বসবাসের উপযোগী বলে ঘোষণা দেয়নি। এছাড়া অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী সেখানে পুনর্বাসিত হতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেছে। অ্যামনেস্টির ওয়েবসাইটে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, স্থানীয় মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, পলিমাটি জমে সৃষ্ট দ্বীপ ভাষাণচরে এ মাসেই ৩০০ থেকে ৪০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ‘স্বেচ্ছা ভিত্তিতে’ পুনর্বাসনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু এ মাসে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাক্ষাতকার নিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এ সময় রোহিঙ্গারা বলেছেন, কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তারা তাদেরকে পুনর্বাসিত হওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে চাপ দিয়েছেন। এরই মধ্যে ভাষাণচরে নাজুক পরিস্থিতিতে বসবাস করছেন তিন শতাধিক শরণার্থী।

সেখানে যেসব পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্য থেকে একটি অংশের সাক্ষাত পেয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রধান ওমর ওয়ারাইচ বলেছেন, জাতিসংঘ এখনও ওই ভাষাণচরকে মানুষের বসবাসের উপযোগী বলে ঘোষণা দেয়নি। তা সত্ত্বেও, সেখানে এই পুনর্বাসন নিয়ে রয়েছে গুরুত্বর প্রশ্ন। যে দ্বীপ সম্পর্কে জানেন না, সেই দ্বীপে পুনর্বাসন সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ও তথ্যসমৃদ্ধ সম্মতি দেননি ওইসব রোহিঙ্গা, যারা কথা বলেছেন অ্যামনেস্টির সঙ্গে। তিনি আরো বলেছেন, শরণার্থীদের স্থানান্তর সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত অবশ্যই স্বচ্ছতার সঙ্গে নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের পূর্ণাঙ্গ অংশগ্রহণ থাকতে হবে তাতে। সেখানে যেকোনো রকম পুনর্বাসন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। ভাষাণচরের উপযোগিতা যাচাই করতে জাতিসংঘকে অনুমোদন দেয়া উচিত বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের। একই সঙ্গে ওই চরে বর্তমানে যে কয়েক শত রোহিঙ্গা আছেন, তাদেরকে কক্সবাজারে পরিবারের কাছে ফিরতে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। ওই চরে যেতে রাজি হয়েছেন এমন একজন রোহিঙ্গা নারী বলেছেন, তার স্বামী রয়েছেন ওই চরে। তাই তিনি সেখানে যেতে রাজি হয়েছেন। তার রয়েছে একটি ছোট্ট শিশু। কক্সবাজারে আশ্রয়শিবিরে তার কোনো আত্মীয়স্বজন নেই। তাই একজন সিঙ্গেল মা হিসেবে তিনি শিবিরে নানা রকম সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। তিনি বলেছেন, শরণার্থীর জীবন অনেক কঠিন। আমার সামনে এখন আর কোনো বিকল্প নেই। মনে হয়েছে সরকার আমার স্বামীকে আর কখনো তীরে আসতে দেবে না। তাই আমি রাজি হয়েছি।