বৌভাতের প্যান্ডেলে হলো বরের জানাজা

277

বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক

মাত্র তিনদিন আগে নববধূকে ঘরে তুলে এনেছিলেন রফিক হাওলাদার। রেওয়াজ অনুযায়ী মেয়েকে নিয়ে যেতে শ্বশুরবাড়ির আত্মীয় স্বজনদের আসার দিন ছিলো বুধবার। নতুন অতিথিদের জন্য সব আয়োজনও করা হয়েছিল। দুপুরে মেহমানরা চলেও আসেন। কিন্তু নববিবাহিত রফিকের মৃত্যুর খবরে সব আনন্দ হঠাৎ বিষাদে পরিণত হয়।

এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের ১ নম্বর মাধবখালী এলাকায়। মাধবখালী ইউনিয়নের বাজিতা গ্রামের সফিজিউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে রফিকুলের মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পরে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য করা প্যান্ডেলেই জানাজা হয় রফিকুলের। এই খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সদ্য প্রয়াত রফিকুলের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।

এমন মৃত্যুর খবর শুনে অনেকেই ছুটে যান রফিকুলের জানাজায় অংশ নিতে।

স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৯ নভেম্বর পারিবারিকভাবে পাশের উপজেলা বেতাগীর বাসন্ডা গ্রামের মান্নান হাওলাদারের মেয়েকে বিয়ে করেন রফিকুল। গৃহস্থলি কাজ করতেন তিনি। তবে শারীরিকভাবে আগে থেকে কিছুটা অসুস্থ থাকলেও সম্প্রতি ভালোই কাটছিলো রফিকুলের। কিন্তু মঙ্গলবার রাত থেকে কিছুটা অসুস্থ বোধ করায় বুধবার সকালে তাকে বরিশালের শেরে-ই- বাংলা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে নির্ধারিত সময়ে রফিকুলের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাদের বাড়িতে চলে আসেন। তাদের আপ্যায়নের জন্য খাবার দাবারেরও আয়োজনও শেষ হয়। কিন্তু দুপুরের দিকে হঠাৎ খবর আসে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন নববিবাহিত রফিকুল। মুহূর্তে বিয়ে বাড়িতে কান্নার রোল শুরু হয়।

পরে হাসপাতাল থেকে মরদেহ বাড়ি আনা হলে নববধূসহ স্বজনদের কান্নায় আকাশ ভারি হয়ে ওঠে। কেউ কাউকে সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অবশেষে বৌভাতের জন্য তৈরি করা প্যান্ডেলে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় রফিকুল হাওলাদারকে।

মির্জাগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জুয়েল  বলেন, ‘জন্ম হলে প্রত্যেকে মারা যাবেন এটাই চিরাচরিত রীতি। কিন্তু এমন মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না। নববিবাহিত এই মানুষটির মৃত্যুর খবরে সবার মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’