পাকিস্তানে সৌদি ক্রাউন প্রিন্সকে বিপন্ন পাখি শিকারের বিশেষ অনুমতি

228

বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক

ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) সহ সৌদি রাজ পরিবারের দুই সদস্যকে বিরল ও বিপন্ন পাখি শিকারের বিশেষ অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান সরকার। বাকি দুই শিকারি হচ্ছেন সৌদি আরবের তাবুক ও হাফর আল-বাতিন শহরের দুই গভর্নর। তাদের মধ্যে তাবুকের গভর্নর গত মৌসুমে শিকার করার জন্য নির্ধারিত অর্থ পরিশোধ করেননি। সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে দ্য ডন।
খবরে বলা হয়, ২০২০-২১ শিকার মৌসুমে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান ও পাঞ্জাব প্রদেশে ‘হাউবার বুস্টার্ড’ নামের পাখি শিকার করতে পারবেন সৌদি রাজ পরিবারের সদস্যরা।
সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রটোকল বিষয়ক উপ-প্রধান গত ১৬ই অক্টোবর সৌদি কর্মকর্তাদের জন্য পাখিটি শিকারের অনুমোদনপত্র পাঠিয়েছে সৌদি দূতাবাসে।
তারা জানায়, শিকারীদের অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রটোকল ও সরকারি পদমর্যাদা মানার কথা থাকলেও, সে রীতি ভেঙে ইসলামাবাদের সৌদি দূতাবাসে পাঠানো অনুমোদন দেওয়া শিকারিদের তালিকার একেবারে তলানিতে উল্লেখ করা হয়েছে এমবিএসের নাম।
সূত্র অনুসারে, ক্রাউন প্রিন্সকে পাঞ্জাবের লায়াহ ও ভাক্কার জেলায় হাউবার বুস্টার্ড শিকারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, তাবুক শহরের গভর্নর এইচআরএইচ প্রিন্স ফাহাদ বিন সুলতান বিন আব্দুলআজিজ বিন-সওদকে বেলুচিস্তানের নশিকি জেলা ও ছাগাই জেলায় (নক কুন্দি বাদে) শিকারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর হাফর আল-বাতিন শহরের গভর্নর এইচএইচ প্রিন্স মানসুর বিন মোহাম্মদ এস আব্দুল রেহমান আল-সওদকে পাঞ্জাবের দেরা ঘাজি খান জেলায় শিকারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রতি বছর শীতে পাকিস্তানে আশ্রয় নেয় বিরল ও বিপন্নপ্রায় প্রজাতির বিভিন্ন পাখি। এরকম এক প্রজাতির পাখি হচ্ছে হাউবার বুস্টার্ড। সাধারণত মধ্য এশীয় অঞ্চলের শীতল অঞ্চলে বাস করে তারা।

তবে শীতে কঠিন আবহাওয়া এড়াতে প্রতি বছর অপেক্ষাকৃত উষ্ণ আবহাওয়ার খোঁজে দক্ষিণদিকে যাত্রা করে তারা। এই মৌসুমে পাখিগুলো শিকার করতে আরব শিকারিদের নিমন্ত্রণ জানিয়ে থাকে পাকিস্তান সরকার।
দিন দিন সংখ্যায় কমে আসছে হাউবার বুস্টার্ড। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সুরক্ষা চুক্তির পাশাপাশি স্থানীয় বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইনেও পাখিটি শিকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে এই পাখি শিকারে দ্বিমত ছিল পাক-প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের। এই পাখি শিকারের অনুমোদন দেওয়ায় তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। এমনকি তার নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় খাইবার পাখতুনখাওয়ায় পাখিটি শিকারের অনুমোদনও দেননি। কিন্তু এখন সৌদি আরবের জন্য ঠিকই অনুমোদন দিয়েছেন তার কেন্দ্রীয় সরকার।
সূত্রগুলো জানায়, গত বছর ২ হাজারেরও বেশি হাউবার বুস্টার্ড শিকার করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সমালোচিত হয়েছিলেন তাবুকের গভর্নর প্রিন্দ ফাহাদ বিন সুলতান। তবে ওই শিকারের জন্য নির্ধারিত ১ লাখ ডলার অর্থ পরিশোধ করেননি তিনি। এছাড়া, ৬০টি ফ্যালকনও শিকার করেছিলেন তিনি। সেগুলোর জন্যও অর্থ পরিশোধ করেননি তিনি। প্রতিটি ফ্যালকন শিকারের জন্য ১ হাজার ডলার করে অর্থ পরিশোধের কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে পাক-সরকার তাবুকের গভর্নরের কাছে গত বছর শিকারের জন্য ১ লাখ ৬০ হাজার ডলার প্রাপ্য।