“জয়িতা”নির্বাচিত হলেন স্কুল শিক্ষিকা ফৌজিয়া বীথি

159

এস এম ফজলে রাব্বী শুভ

আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে এ বছরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য এবং জীবন যুদ্ধে জয়ী বগুড়া জেলায় ৫ নারীকে জয়িতা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। ধুনট উপজেলা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন স্কুল শিক্ষিকা ফৌজিয়া হক বীথি।

তিনি ধুনট সদর ইউনিয়নের বেলকুচি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক মাস্টারের কন্যা। এর আগেও তিনি জয়িতা নির্বাচিত হয়েছিলেন। উপজেলায় তার অবদানের কথা সবাই জানে। অন্যান্যদের মধ্যে যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা হলেন বগুড়া সদরের সাবিয়া নাসরিন পিংকি, সুরাইয়া সাঈদ, ধুনট উপজেলার নূর বানু, ফোজিয়া হক বীথি,নন্দীগ্রাম উপজেলার বুলবুলি রানী বর্মণ।

আজ ৯ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে নির্বাচিত জয়িতাদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হবে।
২০১৬ সাল থেকে দেশে জয়িতা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। পাঁচটি ক্যাটাগরীতে এই জয়িতা পুরস্কার দেওয়া হয়।
(১) অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনকারী নারী।
(২) শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী।
(৩) সফল জননী নারী।
(৪) নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছে যে নারী।
(৫) সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী।
এই ৫ ক্যাটাগরীতে ৫ জন কে নি যের্বাচিত করা হয়েছে। বগুড়া জেলা থেকে ধুনট উপজেলা থেকে নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছে যে নারী এই ক্যাটাগরিতে নির্বাচিত করা হয় স্কুল শিক্ষিকা ফৌজিয়া হক বীথি কে।
শিক্ষিকা ফৌজিয়া বীথি অনেক আগে থেকেই মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। তিনি নিজ উদ্যোগে বেলকুচি চান্দারপাড়া এলাকার ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ বিতরণ করেন। ২ শতাধিক পরিবারের মাঝে বিতরণ করা গাছের মধ্যে ছিল আম কাঠাল, লিচু, পেয়ারা জলপাই, নিম, বট গাছ ও লেবু।
এর আগে করোনা সতর্কতায় বিথি ৮ হাজার মাস্ক নিজ হাতে তৈরী করে সাধারন মানুষের মাঝে বিতরণ করেছেন। লক ডাউনে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা করতে নিজের বেতন বোনাসের টাকায় চাল ডাল আটা তেল আলু ও ঈদের আগে ঈদ সামগ্রী বিতরণ করেন। শিশুদের ঈদের পোশাক, লেখাপড়ার সামগ্রী, বিধবা অসহায় নারীদের শাড়ী বিতরন, নিজের পালিত ছাগল জবাই করে প্রতিবেশীদের মাঝে মাংস বিতরন। বিশেষ করে তিনি নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন সবসময়। কোন নারীর উপর নির্যাতনের কথা জানতে পারলে তিনি ছুটে যান সেখানে। কারো সংসার ভাঙ্গতে দেখলে তিনি নিজ প্রচেষ্টায় সেই সংসার জোরা লাগাতেন। কেউ অসুস্থ হলে তাকে নিয়ে ছুটে যান হাসপাতালে। এমন কাজ করেই নাকি সুখ খুঁজে পান তিনি।

বীথি সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবি রাজ্জাকুল কবির বিদ্যুতের স্ত্রী ও ধুনট এন ইউ মডেল পাইলট সরকারী বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হকের কন্যা। এ ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন যত দিন বাঁচবো ততদিন এই ভাবেই মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাবো।