ঝিনাইগাতীতে ভুয়া কাজীকে ইএনওর অভিনব শাস্তি!

230

বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক

দীর্ঘদিন ধরে শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেআইনিভাবে বিয়ের নিবন্ধন করে আসছিলেন বাছেদ মিয়া নামে ভুয়া এক কাজী। সম্প্রতি একটি বাড়িতে বাল্যবিয়ে পড়াচ্ছেন, এমন খবরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই ওই ভুয়া কাজী পালিয়ে যান।

ওই ঘটনার পরের দিন ওই কর্মকর্তা এলাকায় মাইকিং করেন, ‘কাজী বাছেদ মিয়া আপনি যেখানেই থাকুন না কেন আপনাকে উপজেলা কার্যালয়ে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে বাল্যবিয়ে নিবন্ধন করার অপরাধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে’। এরপর ইউএনও বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন যে, ওই কাজী আসলে ভুয়া।

শাস্তির ভয়ে বাছেদ মিয়া দুই মাস পালিয়ে থাকেন। পরে তিনি গত সপ্তাহে হাজির হন ওই কর্মকর্তার কার্যালয়ে। বাছেদ মিয়া ইউএনওকে অনুরোধ করেন, যেকোনো ধরনের শাস্তি মেনে নিতে তিনি রাজি আছেন, তবুও তার (কাজী) বিরুদ্ধে যেন আইনি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়। তখন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে শর্ত জুড়ে দেন, ‘আপনি (বাছেদ) ভুয়া কাজী এই কথা স্বীকার করে সাতদিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করবেন। আর ১শ টাকার ১শটি স্ট্র্যাম্পে ইউনিয়ন পরিষদে অঙ্গীকার করতে হবে। শর্ত মোতাবেক বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) ছিল মাইকিং করার শেষদিন। ওই সাতদিনই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ওই ব্যক্তিকে মাইকিং করতে দেখা গেছে।

বাছেদ মিয়া নিজ খরচে ইজিবাইকে করে মাইকিং করে নিজে বলছেন, ‘আমি যা করেছি তা অন্যায় করেছি, আমি আরও অঙ্গীকার করছি যে, ভবিষ্যতে আমি কোনো ধরনের বাল্যবিয়ে পড়াবো না, অনৈতিক কোনো কাজ করবো না। যেখানেই বাছেদ মিয়া মাইকিং করছেন সেখানেই মানুষ মজা করে শুনছে। বিষয়টি এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ আনন্দের খোরাক জুগিয়েছে।

এদিকে নির্বাহী কর্মকর্তার এমন কাজকে মানুষজন সাধুবাদ জানিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, ওই কাজীর সরকারি কোনো নিবন্ধন নেই, কাজী পরিচয়ে এলাকায় অন্যায়ভাবে বিয়ে সম্পাদন করে আসছিল দীর্ঘদিন ধরেই। অভিনব ওই শাস্তিতে ভুয়া কাজীদের উপদ্রব কমবে। বিয়ের মতো একটি স্পর্শকাতর কাজ ভুয়া কাজী নিবন্ধন করবেন তা মেনে নেওয়া যায় না।

সুত্র বাংলা নিউজ ২৪