করোনায় মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের ১ লাখ পাসপোর্ট বিতরণ

176

বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক

মালয়েশিয়ায় করোনা মহামারির কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে দেশটিতে চলছে একটানা লকডাউন। সরকার বাধ্যতামূলক করেছে স্বাস্থ্য বিধি, সামাজিক দূরত্ব ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বিধিনিষেধ। সব নীতিমালা অনুসরণ করে ছুটির দিনসহ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দিন-রাত কাজ করে করোনা মহামারিতে ও প্রায় এক লাখ পাসপোর্ট বিতরণ করেছে। যাতে করে প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাদের কর্মক্ষেত্রে সঠিক সময়ে ভিসা রিনিউ করতে পারেন।

বাংলাদেশ হাইকমিশন কুয়ালালামপুরের আমপাং শাখা পাসপোর্ট অ্যান্ড ভিসা উইং এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

সূত্র মতে, সিএমসিও ও এসওপি নির্দেশনা মেনে প্রতিদিন এক হাজার তিন শ’ পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়া হচ্ছে এবং প্রতিদিন প্রায় এক হাজার পাঁচ শ’ নতুন পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে। তাছাড়া পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও অন্যান্য সেবাগুলো নিয়মিত দেয়া হচ্ছে।

মালয়েশিয়ায় সরকারি ছুটি শনিবার ও রোববার। এই শনি-রোববার দূতাবাসের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও প্রবাসীদের দ্রুত পাসপোর্ট সেবা নিশ্চিত করতে পাসপোর্ট সার্ভিস শাখায় কর্মরত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। গত নভেম্বর থেকে দেশটিতে শুরু হয়েছে অবৈধ অভিবাসীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া রিক্যালিব্রেশন।

বৈধকরণ পরিকল্পনার কারণে নতুন পাসপোর্টের আবেদন বৃদ্ধি পেয়েছে আগের চেয়ে কয়েকগুণ। প্রবাসী বাংলাদেশীদের হাতে দ্রুত পাসপোর্ট পৌঁছে দিতে পাসপোর্ট কার্যক্রম সময়োপযোগী করতে অ্যানালগ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার সরকার ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম’ এসওপি ঘোষণার মাধ্যমে অধিক গণজমায়েতকে নিষিদ্ধ করেছে। তবুও প্রবাসীদের পাসপোর্টের প্রয়োজনীয়তাকে গুরুত্ব দিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা মহামারিতে জীবনের ঝুকি নিয়ে দূতাবাসের কর্মীরা পাসপোর্ট বিতরণ করে যাচ্ছে।

বিদেশী দূতাবাসের মধ্যে একমাত্র মালয়েশিয়া ডাকযোগের মাধ্যমে পাসপোর্ট অ্যাপ্লিকেশন রিসিভ সিস্টেম চালু রেখেছে। পাসপোর্ট ডেলিভারির জন্য অনলাইন বুকিং সিস্টেম চালুর পাসপোর্ট সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা সমাধানের বিষয়টি সহজ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ দূতাবাসের ফাস্ট সেক্রেটারি (পাসপোর্ট অ্যান্ড উইং) মশিউর রহমান জানান, মালয়েশিয়া সরকার একটানা লকডাউন ঘোষণার পাশাপাশি কন্ডিশনাল মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (সিএমসিও), স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম (এসওপি) জারি করে রেখেছে। এ সব সরকারি বিধিমালা অনুসরণ করে পাসপোর্ট সার্ভিস স্বাভাবিক রাখা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ।

তিনি আরো বলেন, প্রবাসীরা তাদের কর্মক্ষেত্র স্বাভাবিক ও নিবিড় করতে পাসপোর্ট সংক্রান্ত সব ধরণের সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে এবং দ্রুত পাসপোর্ট ডেলিভারিতে দূতাবাস আন্তরিকভাবে কাজ করছে।

মালয়েশিয়ায় নবনিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম সারওয়ার অভিবাসী দিবসে এক বক্তব্যে বলেন, পাসপোর্ট দ্রুত ডেলিভারি দিতে ইতোমধ্যে হাইকমিশনে ছয়জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং আরো নিয়োগের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মালয়েশিয়া পোস্ট অফিসের সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে যাতে করে পাসপোর্ট মালয়েশিয়া দূর-দূরান্তে কর্মরত কর্মীদের সহজে পৌঁছে দেয়া যায়।

বৈধকরণ নিয়ে হাইকমিশনার জানান, রিক্যালিব্রেশন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ নিয়োগদাতা বা মালিক নির্ভর। তাই না জেনে, না বুঝে, কারো সাথে আর্থিক লেনদেন না করার পরামর্শ রইল। একই সাথে অভিবাসী দিবসে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা প্রবাসীদের জন্য অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।

সুত্র দৈনিক নয়া দিগন্ত