দলীয় সমর্থনের অভাব নেপালে সংসদ ভেঙে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শর্মা ওলি

110

 

বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি পার্লামেন্টের প্রতিনিধি পরিষদ ভেঙে দিয়ে নতুন সাধারণ নির্বাচনের সুপারিশ করেছেন। গতকাল রবিবার সকালে মন্ত্রিসভার এক জরুরি বৈঠকে তিনি এ সুপারিশ করেন। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ওলির এক সহযোগী জানান, নিজ দলে সমর্থন হারানোর পর সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন করে জনসমর্থন চাওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। নেপালের সাবেক মাওবাদী বিদ্রোহীদের সঙ্গে গড়া জোটের নেতৃত্ব দিয়ে ২০১৭ সালের সাধারণ নির্বাচনে বড় জয় পান ওলি। কিন্তু নিজ দল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টিকে এড়িয়ে অন্তরঙ্গ একটি উপদল নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির এক নেতা বলেন, দলের ভেতর সংখ্যাগরিষ্ঠের সমর্থন হারানো ওলি এখন দেশকে নতুন নির্বাচনের পথে ঠেলে দিতে চাইছেন। পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিঝণু রিজল বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের দলের সম্পাদকমণ্ডলী, কেন্দ্রীয় কমিটি ও সংসদীয় দলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন হারিয়েছেন। এখন দলের সঙ্গে কোনো ধরনের আপস-মিটমাট না করে তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে চাইছেন।

এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ওলির কোনো মন্তব্য না পাওয়া গেলেও তার উপদেষ্টা রাজন ভট্টরাই বলেন, দলের ভেতর চাপে পড়েই প্রধানমন্ত্রী এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি ওলিকে দলের প্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ার কথা বিবেচনা করতে বলেছিল বলেও জানান তিনি। তাই তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মুখোমুখি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গণতন্ত্রে এটাই সেরা উপায়।

তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে থাকা নেপালে করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলায় সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে এমনিতেই সমালোচনায় থাকা ওলিকে তার দল হয় প্রধানমন্ত্রিত্ব নয় দলের শীর্ষ পদ, যে কোনো একটি ছাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল বলে জানায় রয়টার্স। ক্ষমতাসীন দলের ভেতরকার টানাপড়েন নিয়ে ওলি গত শনিবার কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের পাশাপাশি নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারির সঙ্গেও বৈঠক করেন বলে জানায় কাঠমাণ্ডু পোস্ট। নেপাল সরকারের এক মন্ত্রী জানান, রবিবার সকালে ডাকা জরুরি বৈঠকে ওলি পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার সুপারিশ করলে কেউই তাতে ‘আপত্তি’ জানাননি।

২০২২ সালে নেপালের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। মন্ত্রিসভা সুপারিশ করায় প্রেসিডেন্ট ভাণ্ডারির হাতে এখন পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন ডাকার সুযোগ সৃষ্টি হলো। কিন্তু নেপালের সংবিধানে মন্ত্রিসভার সুপারিশের ভিত্তিতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার বিষয়টি না থাকায় বিরোধীরা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে বলেও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
কমিউনিস্ট পার্টির নেতা মাধব কুমার নেপাল বলেন, পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার বিষয়টি অসাংবিধানিক। এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত। গগন থাপা নামে কংগ্রেসের এক আইনপ্রণেতা টুইটারে লেখেন, মন্ত্রিসভার পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার সুপারিশ অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক।