বগুড়ার নন্দীগ্রামে বাণিজ্যিকভাবে তৈরি হচ্ছে কুমড়া বড়ি

170

এম.এ রাশেদ, বগুড়ার নন্দীগ্রামে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে তৈরি হচ্ছে কুমড়া বড়ি। তাইতো এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার কুমড়া বড়ি তৈরির কারিগররা। তাদের তৈরি এই বড়ি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হচ্ছে। শীতে প্রতিটি ঘরে ঘরে চলছে কালাই আর চালকুমড়া দিয়ে বড়ি বানানোর মহোৎসব। সারা বছর টুকটাক বড়ি তৈরি হলেও শীতকালই কুমড়া বড়ি তৈরির পুরা মৌসুম। আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ, পৌষ, মাঘ ও ফাল্গুন এই ছয় মাস কুমড়া বড়ি তৈরি ও বিক্রি হয় ব্যাপক ভাবে। সকাল থেকে বাড়ির উঠানসহ বিভিন্ন খোলা জায়গায় চলে কুমড়া বড়ি তৈরির কাজ। বাড়ির গৃহিণী থেকে শুরু করে পুরুষ এবং ছোট-বড় ও বয়স্ক সবাই মিলে কুমড়া বড়ি তৈরি করেন।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে চাটাইয়ের উপর সারি করে বিছানো সাদা মাসকালাইয়ের তৈরি কুমড়া বড়ি। রোদে শুকানো হচ্ছে ওই বড়িগুলো।
উপজেলার হাটধুমা গ্রামের গৌতম মহন্ত বলেন, বড়ি তৈরিতে প্রথমে মাসকালাই পানিতে ভিজিয়ে ঘষে পরিস্কার করে শীল-পাটা বা মেশিনে পেস্ট করা হয়। পরে তা ফেনিয়ে বড়ি বসাতে হয়। একাজে ঝামেলাও অনেক পোহাতে হয়। শীতের মৃদু রোদে বড়ি শুকানো বেশ ঝামেলার কাজ। তারপর যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয় তাহলে তো চিন্তার শেষ নেই। কারণ বড়ি যথাযথ রোদ না পেলে প্রকৃত স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়।
গৃহিণী সবিতা রানী জানান, মাসকালাই, চালকুমড়া, জিরা, কালোজিরা ও মৌরী মিশিয়ে বড়ি তৈরি করা হয়। এরপর বড়িগুলো ২-৩ দিন ভালোভাবে রোদে শুকানোর পর বিক্রি করা হয় । বড়িকে শক্ত করার জন্য এর সঙ্গে অল্প পরিমানে আলো চালের আটা মিশানো হয়।
ওমরপুর হাটে কুমড়া বড়ি কিনতে আসা মিজানুর রহমান বলেন, এ বড়ি তৈরির সব উপকরণই পুষ্টি গুণ সম্পন্ন। বড়ি ভেঙে পেঁয়াজ, রসুন ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাঁজি করলে চমৎকার খাবার তৈরি হয়। এছাড়া বড়ি দিয়ে রান্না করা বেগুন, লাউ, ফুলকপি, আলু প্রভৃতি তরকারির স্বাদই আলাদা।
কুমড়া বড়ি বিক্রেতা তছলিম উদ্দিন জানান, দিন দিন কুমড়া বড়ির চাহিদা বেড়েই চলেছে কিন্তু বড়ি তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভ অনেকটাই কমে গেছে। প্রতি কেজি বড়ি প্রস্তুতে প্রায় ১৬০ টাকা খরচ হয়। খুচরা ১ কেজি বড়ি বিক্রি হয় ২০০ টাকা আর পাইকারি ১ কেজি বড়ি বিক্রি হয় ১৭০-১৮০ টাকা।.