বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক
লাতিন আমেরিকার বড় কোনো দেশ হিসেবে প্রথমবারের মতো গর্ভপাত বৈধ করতে চলেছে আর্জেন্টিনা। দেশটির সিনেটররা ১৪ সপ্তাহের বেশি সময়ের গর্ভের শিশুর গর্ভপাতে বৈধতা দিতে বিতর্ক শুরু করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ১ মার্চ পার্লামেন্টে প্রথম বার্ষিক ভাষণ প্রদানকালে আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, রাষ্ট্রকে অবশ্যই নাগরিকদের, বিশেষ করে নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এই একবিংশ শতকে নিজের শরীরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে যার যার পছন্দকে সম্মান জানাতে হবে। এটা স্পষ্ট যে অনেক নারী গর্ভপাতের পক্ষে। গর্ভপাতকে দণ্ডনীয় অপরাধ করার ফলে অনেক নারী, বিশেষ করে দুস্থ নারীরা লুকোছাপার মধ্য দিয়ে এটি করে থাকে, যা তাদের স্বাস্থ্য, কখনো কখনো জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। ‘
খবরে বলা হয়, রোমান ক্যাথোলিক ধর্মপ্রধান লাতিন আমেরিকার ২১ দেশের মধ্যে কেবল কিউবা ও উরুগুয়েতে গর্ভপাত বৈধ।
বিবিসি জানিয়েছে, বিলটি চেম্বার অব ডেপুটিস-এ ইতোমধ্যেই অনুমোদিত হয়েছে। তবে সিনেটের ফলাফল অপরিবর্তিত থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৮ খুব অল্প সংখ্যক সিনেটর গর্ভপাত বৈধতার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। তবে এ বছর বিলটির পক্ষে সরকারের সমর্থন রয়েছে।
সিনেটর নর্মা ডুরাঙ্গো এএফপিকে বলেন, ‘আজকে একটি প্রত্যাশাময় দিন। আমরা এমন একটি প্রকল্প নিয়ে বিতর্ক শুরু করতে যাচ্ছি যা আরও অনাকাক্সিক্ষত মৃত্যু রোধ করবে।’
লাতিন আমেরিকায় এখনো বেশ প্রভাব বজায় রাখা ক্যাথলিক গির্জা এই আইনের বিরোধীতা করেছে। এটি সিনেটরদের আইনটি বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে। সিনেটে বিতর্ক শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে পোপ ফ্রান্সিস টুইটারে লিখেছেন, ‘প্রত্যেক অপ্রত্যাশিত সন্তানই সৃষ্টিকর্তার সন্তান।’ পোপ ফ্রান্সিস নিজেও একজন আর্জেন্টাইন নাগরিক।
আর্জেন্টিনার কংগ্রেসের সামনে আইনটির পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে অনেক লোক জড়ো হয়েছেন। বর্তমানে আর্জেন্টিনায় শুধুমাত্র ধর্ষণ অথবা মায়ের মৃত্যুঝুঁকি থাকলে গর্ভপাত করার বৈধতা রয়েছে।
আইনের পক্ষের একজন বিক্ষোভকারী এএফপিকে বলেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আইনটি পাস হবে। যদি না হয় আমরা রাজপথেই থাকব কারণ এই লড়াই রাজপথে শুরু হয়েছে এবং রাজপথেই চলবে।’
তবে গর্ভপাতের বৈধতার বিপক্ষের আন্দোলনকারীরা আশা করছেন এবারও সিনেট আগের মতোই আইনটি প্রত্যাখ্যান করবে। ‘আমি জানি প্রত্যেক সিনেটরের তার সন্তান, নাতি-নাতনির জন্য ভালোবাসা রয়েছে। সর্বোপরি শিশুরা যে আশা আমাদের দেয়, যে আনন্দ আমাদের দেয় তার প্রতি সিনেটরদের ভালোবাসা রয়েছে। আমি নিশ্চিত তারা এতে জয়ী হবে’, বলেন একজন আন্দোলনকারী।
এল সালভাদর, নিকারাগুয়া ও ডোমিনিকান রিপাবলিকে গর্ভপাত পুরোপুরি নিষিদ্ধ। এছাড়া লাতিন আমেরিকার প্রায় সব দেশে বিশেষ পরিস্থিতি ছাড়া গর্ভপাত নিষিদ্ধ। এই অঞ্চলের উরুগুয়ে, কিউবা, গায়ানা ও মেক্সিকোর কিছু অংশে গর্ভপাতে বৈধতা রয়েছে। তবে সেক্ষেত্রে কত সপ্তাহের গর্ভ তার উপর নির্ভর করে গর্ভপাতের অনুমতি দেয়া হয়। সূত্র : বিবিসি,