বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর গতকাল মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সউদী আরবকে ৩০০০ যুদ্ধাস্ত্রের সম্ভাব্য বিক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে যার মূল্য ২৯ হাজার কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের মেয়াদের শেষে দিনগুলিতে এই বিক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হল। মঙ্গলবার পেন্টাগন এ কথা জানিয়েছে বলে খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পেন্টাগন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, প্রস্তাবিত বিক্রয় বর্তমান এবং ভবিষ্যতের হুমকি মোকাবেলা করার জন্য সউদী আরবের ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে। পেন্টাগনের প্রতিরক্ষা নিরাপত্তা সহযোগিতা সংস্থা মঙ্গলবার কংগ্রেসকে সম্ভাব্য বিক্রয় সম্পর্কে অবহিত করেছে। পেন্টাগন আরো জানায়, সউদী আরবের কাছে এসব অস্ত্র বিক্রির প্রধান ঠিকাদার হচ্ছে বোয়িং কোম্পানি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতার মেয়াদ এখন প্রায় শেষ। সব মিলে প্রায় ২১ দিন তিনি ক্ষমতায় আছেন। এ সময়ে এই অস্ত্র বিক্রি অনুমোদন দেয়া হলো। তবে সউদী আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জো বাইডেন।
তিনি চান ইয়েমেনে যুদ্ধ বন্ধ। ওই যুদ্ধের কারণে বিশ্বে ভয়াবহ এক মানবিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। তাই এই যুদ্ধ বন্ধে রিয়াদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বাইডেন সউদী আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা সউদী আরব।
উল্লেখ্য, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা সউদী আরব। এই অস্ত্র বিক্রির প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে ৩০০০ জিবিইউ-৩৯ স্মল ডায়ামিটার বোম ১ (এসডিবি১), কন্টেইনার, সাপোর্ট সরঞ্জাম, খুচরা যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তিগত সমর্থন।
দুদিন আগে আল-জাজিরার এক রিপোর্টে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন সউদী আরবের কাছে ৫’শ মিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির জন্যে চাপ সৃষ্টি করছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল তারচেয়ে অনেক বেশি বরং ২৯ হাজার কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র বিক্রি করল ট্রাম্প প্রশাসন।
সউদী আরবের সিনিয়র সাংবাদিক জামাল খাসোগজিকে হত্যা, দেশটিতে মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতি ও ইয়েমেনে সউদী আগ্রাসনের কারণে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো রিয়াদের কাছে ওয়াশিংটনের অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করার জন্যে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু তাতে কোনো আমল দেয়নি ট্রাম্প প্রশাসন। ২০১৪ সালে ইয়েমেনে সউদী সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আব্দরাব্বু মনসুর হাদি পালিয়ে সউদী আরব চলে গেলে হুথি বিদ্রোহীরা দেশটির বেশ কিছু অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে নেন। এরপর সউদী জোট সমর্থিত দেশ আমিরাত, মিসর, বাহরাইন ইয়েমেন যুদ্ধে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। জাতিসংঘ বলছে ইয়েমেনে বিশে^র সবচেয়ে বড় মানবসৃষ্ট বিপর্যয় চলছে। ২০১৫ সালে মার্কিন সেনারাও সউদী জোটকে ইয়েমেন যুদ্ধে সাহায্য করে। গত বছর এধরনের সহায়তা থেকে মার্কিন সেনাদের বিরত রাখতে কংগ্রেসে একটি বিল উত্থাপন হলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাতে ভেটো দেন। জাতিসংঘ ইতিমধ্যে ইয়েমেনে দুর্ভিক্ষময় পরিস্থিতির জন্যে সতর্ক করেছে। সউদী আরবের কাছে ফের মার্কিন অস্ত্র বিক্রির পর তা যে ইয়েমেন যুদ্ধে ব্যবহৃত হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। সূত্র : রয়টার্স, আল জাজিরা