বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক
বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে দিনব্যাপী অবস্থান করছেন এক তরুণী। প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থানের সময় প্রেমিক যুবকের চাচাত ভাই ওই তরুণীর মোবাইল ফোন কেড়ে নেন বলেও রয়েছে অভিযোগ। এদিকে প্রেমিক বিয়ে না করলে ওই তরুণী নিজ বাড়িতে ফিরবেন না বলে জানিয়েছেন। বাসায় প্রেমিকা বিয়ের দাবিতে এসে অবস্থান নিয়েছেন শুনে পলাতক প্রেমিক।
শনিবার (২ জানুয়ারি) ঘটনাটি ঘটেছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ঝলই শালশিড়ি ইউনিয়নের কালিয়াগঞ্জ গ্রামে। সরেজমিনে কালিয়াগঞ্জ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হবিবর রহমানের বাসার আঙিনায় অবস্থান করছে ওই প্রেমিকা।
এ সময় ওই তরুণী সাংবাদিকদের জানান, প্রাইভেট পড়তে এসে দেড় বছর আগে প্রেমিক হান্নানের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ার প্রস্তাব দেয় হান্নান। একপর্যায়ে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। প্রথমে প্রতিদিনই মোবাইলে কথা হয় প্রেমিকের সঙ্গে। ধীরে ধীরে প্রেমিক হান্নানের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। গত দেড় বছরে বেশ বহুবার হান্নান রাতে তার বাসায় গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়।
প্রেমিকা সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, কয়েকবার তার গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে। কিছুদিন আগে প্রেমিক হান্নান সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য মেরিনার সঙ্গে পরিচয় করে দেয় তাকে। পরে ওই ইউপি সদস্যের সঙ্গে বোদা উপজেলার ময়দানদিঘি বাজারে গাইনি চিকিৎসা নেয়। সেখানে গাইনি সমস্যা সমাধান না হওয়ায় বোদা বাজারের একটি বাড়িতে গিয়ে গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করে। তবে প্রেমিক হান্নান তাকে বোদা বাজার হতে গর্ভপাতের জন্য ওষুধ কিনে বাড়ি ফেরার কথা বলে।
সম্প্রতি প্রেমিক হান্নানকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় প্রেমিকা। তবে বিয়েতে প্রেমিক হান্নানের পরিবার রাজি হয়নি বলে জানায় হান্নান। গত ৩১ ডিসেম্বর সর্বশেষ হান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে মোবাইলে তার নম্বর ব্লাক লিস্ট করে রেখেছেন। প্রেমিকের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় আর কোনো উপায় না পেয়ে ওই শিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন প্রেমিকা। বিয়ে না করলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেবেন বলে সাংবাদিকদের জানান ভুক্তভোগী ওই তরুণী।
এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে মহিলা ইউপি সদস্য মেরিনা আকতারের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, দুই পরিবারের সঙ্গে আমার পরিচয় রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। তবে চিকিৎসার কথা বলে আমার সঙ্গে ময়দানদিঘি ও বোদা বাজারে ওষুধের দোকানে গিয়েছিল ওই তরুণী। কিন্তু গর্ভপাতের বিষয়ে আমার জানা নেই।
পলাতক প্রেমিক হান্নানের বাবা স্কুলশিক্ষক হবিবর রহমান জানান, আসলে মেয়েটি আমার বাড়িতে অবস্থান নেওয়া আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমার ছেলের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তা ছাড়া ওই মেয়েটির আমাদের এলাকার বেশকিছু ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
এদিকে প্রেমিকার বাবা ইউনুস আলীর দাবি, আমার মেয়ের সঙ্গে ওই ছেলের দেড় বছর হতে সম্পর্ক। এখন বিয়ের কথা শুনে ছেলেটি বাড়ি থেকে পালিয়েছে। আমি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেছি তবে আমার মেয়েকে যদি ছেলের পরিবার মেনে না নেয় তাহলে আমি আইনের আশ্রয় নেব।
ঝলই শালশিরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, ফকিরপাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর মেয়ে স্কুলশিক্ষক হবিবর রহমানের বাড়িতে অবস্থানের বিষয়টি আমাকে জানিয়েছে মেয়েটির পরিবার। আমাকে অভিযোগও করেছে। তবে যদি ছেলে পক্ষের কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে আমি বিষয়টি মীমাংসার জন্য উদ্যোগ নেব।