কন্যা সন্তান জন্ম হলেই পুলিশ কর্মকর্তার উপহার

135

বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক

কন্যা সন্তানের বাবা-মাকে পুরস্কৃত করার উদ্যোগ নিয়ে আলোচনায় এসেছেন টাঙ্গাইল কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মোশারফ হোসেন। “কন্যা সন্তান বোঝা নয় আশীর্বাদ, কন্যা সন্তান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। কন্যা সন্তান জন্ম হলে ফোন করুন উপহার পৌঁছে যাবে” সম্বলিত ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে তার অফিস কক্ষে।

কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ার পর ফোন দিলেই মিলছে এই পুলিশ কর্মকর্তার পক্ষ থেকে উপহার। ‘কন্যা সন্তান সমাজের বোঝা নয়, আর্শিবাদ। কন্যা সন্তান আল্লাহ তা’আলার শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। কন্যা সন্তান মা-বাবার জান্নাতের সুসংবাদ নিয়ে দুনিয়ায় আগমন করে।’ মঙ্গলবার রাতে পুলিশ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন স্ট্যাটাস দিয়ে উপহারের ঘোষণা দেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। বুধবার প্রথমদিনেই চার কন্যা সন্তারের বাবা-মা ওই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে গিয়ে পুরস্কার গ্রহণ করেন।

মো. মোশারফ হোসেন টাঙ্গাইলের কাগমারী পুলিশ ফাঁড়িতে ইনচার্জের দায়িত্বে রয়েছেন।

বিকেলে কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোশারফ হোসেনের অফিসে ঢুকতেই চোখে পড়ে উপহার ঘোষণার ফেস্টুন। এমন উদ্যোগ নিয়েছেন কেন? বিষয়টি তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি চাকরি সূত্রে চরাঞ্চল ও গ্রাম পর্যায়ে ঘুরেছি। ওইসব এলাকায় কন্যা সন্তান জন্ম হলে মায়েদের নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। বিষয়টি আমার খুবই খারাপ লেগেছে। সেই খারাপ লাগা থেকে আমি এই উদ্যোগ নিয়েছি। কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ির এলাকায় নবজাতক কন্যা সন্তানের সকল মা’দের পুরস্কৃত করা হবে। আমি ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে ঘোষণা দিই। অনেকেই ফোন দিচ্ছেন। সচেতন মহল সাধুবাদও জানাচ্ছেন। প্রথম দিনেই চার কন্যা সন্তানের বাবা-মাকে সামান্য উপহার দিয়েছি। এই উপহার অব্যাহত থাকবে।

উপহার স্বরূপ তিনি দিচ্ছেন, কন্যা সন্তান সমাজের বোঝা নয়, আর্শিবাদ। কন্যা সন্তান আল্লাহ তা’আলার শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। নবজাতকের আগমনে ‘মা’ আপনাকে শুভেচ্ছা’ এসব লেখা ক্রেস্ট, বেবি ডায়াপার ও লোশন। তবে এই উপহার শুধু পাবেন টাঙ্গাইলের কাগমারী পুলিশ ফাঁড়ির আওতায় বসবাসরত সাধারণ মানুষ।

উপহার নিতে আসা মাসুদা খাতুন নামের এক কন্যা সন্তানের মা বলেন, গত ২১ ডিসেম্বর আমি প্রথম কন্যা সন্তানের মা হয়েছি। পুলিশ কর্মকর্তার ফেসবুকে উপহারের বিষয়টি দেখে আমি পুলিশ ফাঁড়িতে এসেছি। উপহার পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। আমার প্রথম সন্তান মেয়ে। মেয়ে হওয়ার জন্য আমার পরিবার খুশি হয়নি, কিন্তু আমি এবং আমার স্বামী অনেক খুশি।

গোলাম রাব্বানী রাসেল নামের আরেক কন্যা সন্তানের বাবা বলেন, চলতি মাসের ১ জানুয়ারি আমি দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছি। কন্যা সন্তান হওয়ায় আমি ও আমার স্ত্রীও অনেক খুশি। পুলিশ কর্মকর্তার ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে পুলিশ ফাঁড়িতে উপহার নিতে এসেছি। আমি উপহার পেয়ে আনন্দিত। উপহার পেয়ে তিনি পুলিশ কর্মকতাকে ধন্যবাদ জানান।

টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। আমি নিজে গিয়ে দেখবো। মায়েদের উপহার দিলে তো ভালোই।।