ধুনটে মথুরাপুর বাজার জনদুর্ভোগের নাম ; প্রশাসন নিশ্চুপ

177

শেখ সোহেল রানা- (ধুনট-বগুড়া)প্রতিনিধিঃ বগুড়া ধুনটের মথুরাপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী হাট ‘অলোয়া- মথুরাপুর’। কালের সাক্ষী হিসাবে পূর্বে বাজারটি সুনাম,খ্যাতি অর্জন করলেও ইদানীং সকল গৌরব যেন ম্লান হয়ে যাচ্ছে।

লক্ষ্য করা যায়, সম্প্রতি যানজট,শব্দ দুষন,বায়ু দুষন, ফুটপাত দখল,অনুমোদন বিহীন গাড়ি পার্কিং, অপরিকল্পিত দোকানপাট সহ নানা মুখি সমস্যায় জর্জরিত উন্নয়নমুখী মথুরাপুর বাজারটি এখন অসুস্থ জনপদের নাম।

উক্ত বাজারের আশেপাশে রয়েছে বেশ কয়েকটি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা,হাসপাতাল সহ বিভিন্ন এনজিও, অফিস, ব্যাংক ও ছোট খাটো শিল্প কারখানা ।

বাজারটির উত্তরে ধুনট,পর্বে সিরাজগঞ্জ ,দক্ষিনে ধানগড়া,পশ্চিমে চান্দাইকোনা সহ দেশের বৃহত্তর হাইওয়ে রাস্তা গুলোর সংযোগ স্থল, যার প্রাণ কেন্দ্র মথুরাপুর বাজার জিরোপয়েন্ট। বহুল আলোচিত বাজারটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে রাখছে বিরাট অবদান।

তবে অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, সম্প্রতি বাজারটি যানজটের নগরী নামে খ্যাত। চলছে ব্যাটারি চালিত ,ইজিবাইক,অটো,ভটভোডি,সিএনজি সহ ভারি ভারি যানবাহন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।

এছাড়া রাস্তার দুপাশে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে হরেক রকম দোকানপাট, যা রাস্তার সংকীর্ণতার জন্য দায়ি । লীজকৃত দোকানদার ও ঘর মালিকদের অতিরিক্ত জায়গা দখল করে পন্য বিক্রি ও পলিথিনের ব্যবহারের ফলে সাধারন মানুষের হাঁটা চলাই মুশকিল। উল্লেখ্য মথুরাপুর বাজার ব্রিজের পূর্ব-দক্ষিন পাশে সিএনজির নামমাত্র স্টেশন ও জিরোপয়েন্টে অটো ভ্যান গুলো যানজটের প্রধান কারন বলে মনে করেন সচেতন মহল।

শনিবার ১৬ জানুয়ারি ২১ইং সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, করোনা কালিন সময়ে স্কুল কলেজ বন্ধ। তবুও বাজার মুখি মানুষের ভোগান্তি চরমে। পূর্বের দৃশ্য থেকে জানা যায়, স্কুল- কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের ভোগান্তি ও যানজট অতিক্রম করে চলাচলের দৃশ্য বড়ুই ঝুঁকিপূর্ণ ও অাশঙ্কাজনক।

বিশেষ করে সোমবার হাটের দিনে এমপি এসটি হাই স্কুল,জিএম সি ডিগ্রি কলেজ,পীরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়,মথুরাপুর ইন্টারন্যাশনাল কেজি,নিউমিলিনিয়াম কেজি ও আমেনা ময়েন সিনিয়র মাদ্রাসা ছুটির সময়ের দৃশ্য ও ছাত্র ছাত্রীদের ভোগান্তি দেখে হতবাক হয়েছেন অনেকেই। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ছুটেচলা কোমলমতি শিশু ,বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

এছাড়া বাজারটিতে নেই যথাযত প্রশস্ত রাস্তা,নেই জরুরি মুহুর্তে অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা। এছাড়া বাজারের পূর্ব পাশে কসাইপট্টি ও মাছপট্টির দুর্গন্ধে নাকটিপে মুখে রুমাল চেপে চলতে হয় সর্বোসাধারনের। এবং হাটের অভ্যন্তরে সবজি বাজারে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি সহ নানা সমস্যা চোখে পড়ে।

মথুরাপুর বাজারে সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এবং জনদুর্ভোগ কমাতে হাট ইজারাদার (মালিক পক্ষ) আল হেলাল ব্যক্তিগত ভাবে বেশ কয়েকবার উপজেলা প্রশাসন (ইউএনও) অফিসে লিখিত অভিযোগ করেও সুফল পাননি বলে জানান। তিনি মনে করেন যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও ফুটপাত দখলকৃত দোকান পাটের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালালে বাজারের পরিবেশটা সুন্দর হবে।

এছাড়া বাজারের জিরোপয়েন্টে গোল চত্বর নির্মান কিংবা ট্রাফিক সিগনালের ব্যবস্থা করলে উপকৃত হবে সর্বসাধারণ। এ সমস্যা সমাধান কল্পে শিঘ্রই উপজেলা প্রশাসনকে বাজারটি মনিটরিং এর জন্য বিশেষ অনুরোধ করছি।

এ প্রসঙ্গে পীরহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক- আবু হানিফ ও মুলতানি পারভীন শাজাহান তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক- গোলাম মোস্তফা (বি.কম) বলেন,আমরা চরম কষ্টে চলাচল করি। আমাদের এই দুর্ভোগ দেখার কেউ নাই। আমরা আস্থার সাথে দাবি জানাচ্ছি, শিঘ্রই মথুরাপুর বাজারকে পরিবেশ বান্ধব এবং যানজট মুক্তকরনে নবাগত উপজেলা প্রশাসন (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত স্যার কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহন করবেন বলে বিশ্বাস করি।

বাজারের বিশৃঙ্খলা ও যানজট প্রসঙ্গে জিজ্ঞাস করলে ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ সেলিম বলেন, বিষয়টি আমারও নজরে এসেছে। উক্ত সমস্যার দ্রুত সমাধান দরকার। এ বিষয়ে আমার উর্ধতন কর্তিপক্ষকে অবহিত করবো, আমি মনে করি সমস্যাটি সবার।

তাই ব্যবসায়ী,গাড়ি মালিক,শ্রমিক সংগঠন,ও সাধারন পথচারীদের সচেতন হওয়াটা জরুরী। এছাড়া অটো, সিএনজির জন্য পৃথক পৃথক স্টেশন হলে ভালো হয়। কিন্তু আমাদের পর্যাপ্ত গাড়ি পার্কিং ও জায়গার সংকট রয়েছে। মথুরাপুর বাজারকে পরিবেশ বান্ধব করতে সকলের সহযোগীতা কমনা করছি।