গণ-শৌচাগারে বসবাস স্বামী-স্ত্রীর

123

বগুড়া এক্সপ্রেস ডেস্ক
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ১লক্ষ ভূমিহীন গৃহহীন পরিবার ঘর পেলেও সে খবর জানেই না শহর পরিচ্ছন্ন কর্মী শাহাদাৎ দম্পতি। ভূমিহীন, অসহায় পরিচ্ছন্ন কর্মী শাহাদাত ও স্ত্রী নার্গিস দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে বোয়ালমারীর পৌরসদরের একটি পাবলিক টয়লেটে।

ফরিদপুরের বোয়ালমারী বাজারের টিনপট্টি এলাকায় গণশৌচাগারই এই দম্পতির ঘরবাড়ি। শৈশবে মা- বাবাকে হারিয়ে বোনের সাথে বোয়ালমারী আসে শাহাদাত। প্রথমে টোকাই হিসেবে কাগজ কুড়িয়ে, মুটের কাজ করে কখনওবা সুইপারের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছে শাহাদত। তারপর পৌরমেয়র মোজাফফর হোসেনের বদান্যতায় শহর পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে মাস্টার রোলে কাজ ও হেলিপ্যাড এলাকায় থাকার জন্য একটি ছোট্ট ছাপরা ঘর পেলেও পরিবারের অন্য সদস্যদের জায়গা সংকুলান না হওয়ায় স্বামী-স্ত্রী বসবাস শুরু করেন এই গণশৌচাগারে।

শাহাদত বলেন, ‘আমার পিতার বাড়ি মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর উপজেলার পাচুড়িয়ায়। জন্মের সময় মার মৃত্যু হয় আর ৬ বছর বয়সে বাবা কে হারিয়ে চলে আসি বোয়ালমারীতে। পৈতৃক সম্পদ বলে কিছু ছিল না। দারিদ্র্যতার কষাঘাতে এবং জীবিকার তাগিদে শৈশব থেকে কাগজ কুড়িয়ে, টুকটাক কাজ করে জীবন চালিয়ে নিচ্ছি কোনো মতে, জমি ঘরবাড়ি দূরে থাক নিয়তি ভাড়া বাড়িতেও থাকার ভাগ্য লেখেনি। আবার অনেকে সুইপারের কাজ করি বলে বাড়ি ভাড়াও দেয় না। বোয়ালমারীর পৌরমেয়র মোজাফফর হোসেন বাবলু মিয়া মাস্টার রুলে দৈনিক ১৬০টাকা বেতনে বাজার ঝাড়ুদারের চাকরি দিয়েছেন এবং বোয়ালমারী হ্যালিপ্যাডে সরকারি জায়গায় থাকার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যদের জায়গা না হওয়ায় আমি ও আমার স্ত্রী পাবলিক টয়লেটকে নিজেদের বাসস্থান বানিয়ে নিয়েছি। এখন বয়স হয়েছে রোগবালাইয়ের জন্য ঠিক মত কাজও করতে পারিনা।’

শাহাদাত এর স্ত্রী নার্গিস বলেন, ‘দৈনিক বাজার ঝাড়ুর কাজ করার পর মানুষের বাড়িতে কাজ করে যা পাই তাই খাই। আবার কিনেও খাবার খাই। অনেক সময় না খেয়েও দিনযাপন করি। সরকার ঘর দিচ্ছে তা আমরা জানি না, কেউ বলেও নাই। যদি সরকার আমাদেরকে একটা ঘর দিতো জীবনের শেষ দিনগুলো শান্তিতে থাকতাম।’

নার্গিস আরও বলেন , ‘অনেকেই আসে খোঁজখবর নিয়ে যায়, কিন্তু আমাদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় না। আমাদের একশতাংশ জমিও নাই যে সেখানে একটা ঘর করে থাকব।