যে কোন দিন ফলাফল প্রকাশ

এইচএসসির ‘অটোপাসের’ গেজেট জারি

136

অনলাইন ডেস্ক

পরীক্ষা ছাড়াই এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে সংসদে পাস হওয়া তিনটি সংশোধিত আইনের গেজেট জারি করা হয়েছে। এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তিনটি বিলে সম্মতি দেন। রাষ্ট্রপতির সম্মতির পর বিল তিনটি আইনে পরিণত হয়।

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে ‘ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) আইন-২০২১’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড (সংশোধন) আইন-২০২১’ ও ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (সংশোধন) আইন-২০২১’- এর গেজেট প্রকাশ করা হয়।

এখন যে কোনো দিন ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এসএসসি ও জেএসসির পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার ফল দিতে এই আইনটি পাস করা হয়।

আরও পড়ুন: বিলে রাষ্ট্রপতির সম্মতি: যে কোনো দিন এইচএসসির ফল

এর আগে রোববার (২৪ জানুয়ারি) সংসদে প্রথমে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ পাসের জন্য উত্থাপন করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এরপর বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১ ও বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১ বিল দুটি পাস হয়।

বিল তিনটি পাসের সময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিলটি পাসের পর প্রজ্ঞাপন করতে দু’দিন সময় লাগবে। এরপরই আমরা দ্রুত ফলাফল প্রকাশ করব।

আগের আইন অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়ার পর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু সংশোধিত বিলে পরীক্ষা ছাড়াই বিশেষ পরিস্থিতিতে ফলাফল প্রকাশের বিধান রাখা হয়েছে।

বিল তিনটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে ডা. দীপু মনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনে বিশেষ পরিস্থিতিতে অতিমারি, মহামারির কারণে বা সরকার নির্ধারিত সময়ে কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোনো পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ এবং সনদ প্রদান করা সম্ভব না হলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা কোনো বিশেষ বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়াই বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণ করে উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন এবং সনদ প্রদানের জন্য নির্দেশনা জারির বিষয় উল্লেখ রয়েছে।

এদিকে করোনায় দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি উঠেছে। সেই উদ্যোগ সফল করতে এবার গাইডলাইন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। গাইডলাইনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দুই মাসের মধ্যে কোনো পরীক্ষা না নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

গত শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) রাতে নির্দেশিকাটি সব মাধ্যমিক, স্কুল ও কলেজ, উচ্চ মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরযুক্ত উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

বলা হয়েছে, এ গাইডলাইন অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পাওয়ামাত্র শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে প্রস্তুত থাকতেও বলা হয়েছে।

গাইডলাইনে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে, ক্লাসরুমের বেঞ্চগুলোকে তিন ফুট দূরত্বে স্থাপন করতে হবে। বেঞ্চের দৈর্ঘ্য পাঁচ ফুটের কম হলে প্রতি বেঞ্চে একজন করে শিক্ষার্থী বসতে পারবে এবং পাঁচ থেকে সাত ফুট দৈর্ঘ্যের বেঞ্চে দুজন শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস করতে পারবে।

স্কুলে প্রবেশের আগেই থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের শিফটিং পদ্ধতিতে ক্লাস, প্রথম ১৫ দিন শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করে আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি এবং দুই মাসের মধ্যে কোনো পরীক্ষা না নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নির্দেশনায়। ৩৮ পৃষ্ঠার নির্দেশনাটি ইউনিসেফের সহযোগিতায় প্রস্তুত করা হয়।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৮ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। সবশেষ ছুটি বাড়িয়ে আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে।