বগুড়ার ধুনটে দ্বিতীয় স্ত্রীকে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ!

189

এম.এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাবার বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা না দেওয়ায় আনার কলি (৩৩) নামে এক গৃহবধূকে বিষ খাইয়ে হত্যার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও সতীনের বিরুদ্ধে। নিহত আনার কলি বগুড়া ধুনট উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের ঈশ্বরঘাট গ্রামের মোঃ মোজাম্মেল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী।

৮ই ফেব্রুয়ারী (সোমবার) দুপুর ১২টার দিকে আনার কলির মৃতদেহ তার স্বামীর বাড়িতে দাফনের প্রস্তুতিকালে, ধুনট থানার পুলিশ গিয়ে আনার কলির মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় গত ৭ই ফেব্রুয়ারী ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত্রি অনুমান ৩টায় আনার কলির মৃত্যু হয়।

ধুনট উপজেলার কালের পাড়া ইউনিয়নের ঈশ্বরঘাট গ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের মেয়ে আনার কলির বিগত ১৫ বছর পূর্বে পারিবারিক সম্মতিতে একই গ্রামের এক যুবকের সাথে বিবহ হয়। বিবাহর পর তার দাম্পত্য জীবনের সুখেই ছিল আনার কলি। আনার কলির সংসার জীবন চলাকালীন, প্রতিবেশী অটোরিকশা চালক মোজাম্মেল হক বিভিন্ন রকম প্রলোভন দিয়ে আনার কলির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এলাকার স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান আনার কলির আগের স্বামীর কাছ থেকে বিচ্ছদ হয় পড়াই সাড়ে ৩ বছর।

গত ২০১৮ সালের মে মাসে আনার কলিকে বিয়ে করেন মোজাম্মেল হক। তবে মোজাম্মেল হকের আগের পক্ষের স্ত্রী ও সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর দ্বিতীয় স্ত্রী আনার কলিকে তার বাবার বাড়ি থেকেই সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা এনে দেওয়ার জন্য জ্বালা-যন্ত্রণা করেন মোজাম্মেল হক। কিন্ত তার জালা যন্ত্রনায় রাজি হয়নি আনার কলি। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আনার কলিকে হত্যার পরিকল্পনা করে মোজাম্মেল হক ও তার প্রথম স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন।

এক পর্যায়ে ৬ই ফেব্রুয়ারী শনিবার দুপুরের দিকে মোজাম্মেল হক ও তার প্রথম স্ত্রী নিজ বাড়িতে মিষ্টির সাথে বিষ মিশিয়ে কৌশলে আনার কলিকে খায়ানো হয়। তখন আনার কলি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে তার বাড়ি থেকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্ষে ভর্তি করে স্বামী মোজাম্মেল হক। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। আনার কলির মৃত্যুর বিষয়টি তার স্বাজনদের না জানিয়ে গোপনে মৃত্যু দেহ দাফনের প্রস্তুতি নেয় মোজাম্মেল হক। এ বিষয়টি জানার পর আনার কলির ভাই আব্দুস ছোবাহান পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে অবগত করেন । এ ঘটনায় রিপোর্ট লেখা কালীন থানায় কোন মামলা দায়ের হয় নাই মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

আনার কলির স্বামী মোজাম্মেল হক বলেন,আমার দ্বিতীয় স্ত্রী মিষ্টি খেয়ে ডায়রীয়া রোগে আক্রন্ত হয়ে বমি ও পাতলা পায়খানা করে অচেতন হলে তাকে আমি অতি দ্রুত নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করি । সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। তাকে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা।

ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক আব্দুল জাব্বার বলেন, আনার কলির স্বামীর বর্ণনা অনুযায়ী ডায়রীয়া রোগের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ধুনট থানার (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, আনার কলির মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এসআই নুরুজ্জামান কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার তদন্ত প্রতিবেদন ও ময়না তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।