সেনাবিরোধী বক্তব্যের পর বরখাস্ত হলেন মিয়ানমারের জাতিসংঘ দূত

112

অনলাইন ডেস্ক

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা বিদায় করতে সর্বোচ্চ কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানোর পর জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোয়ে তুনকে বরখাস্ত করেছে দেশটির সেনা শাসকরা।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোয়ে তুন তার দেশে সেনাশাসনের বিরুদ্ধে আবেগঘন বক্তব্যে বলেন, অবিলম্বে সামরিক অভ্যুত্থানের অবসান ঘটাতে, নিরীহ লোকজনের ওপর নির্যাতন বন্ধে, জনগণের কাছে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে সম্ভাব্য কঠোরতম পদক্ষেপ প্রয়োজন আমাদের।

এর প্রতিক্রিয়ায় শনিবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়। বলা হয়, তিনি ‘দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন এবং সরকার স্বীকৃত নয় এমন একটি সংগঠনের পক্ষে বলেছেন যারা দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে না’। তিনি রাষ্ট্রদূতের ‘ক্ষমতা ও দায়িত্বের’ অপব্যবহার করেছেন।

শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্যে মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় যে কোনো উদ্যোগ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান কিয়াও মোয়ে তুন। তিনি সু চির ক্ষমতাচ্যুৎ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন বলেও জানান এই রাষ্ট্রদূত।

তিনি বলেন, “অবিলম্বে সামরিক অভ্যুত্থান বন্ধে আমাদের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আরও শক্ত পদক্ষেপ দরকার। নিরীহ মানুষের ওপর নিপীড়ন বন্ধ, রাষ্ট্রক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য তা দরকার।”

করতালি দিয়ে তার এই বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানানো হয়। একে ‘সাহসী’ বক্তব্য অভিহিত করেছেন অনেকে, যাদের মধ্যে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ডও রয়েছেন।

এদিকে, শনিবার মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধীদের ওপর দমনাভিযান তীব্রতর করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম কয়েক ডজনকে গ্রেপ্তার এবং মনয়ি শহরে এক নারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর দিয়েছে। ওই নারীর অবস্থা সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে অং সান সু চিসহ ক্ষমতাসীন দল এনএলডির শীর্ষ নেতাদের আটক করার পর দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে।