গাবতলীর চাঞ্চ্যল্যকর শিশু হানজালাল(৬) হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং মূল আসামী গ্রেফতার

221

মুহাম্মাদ আবু মুসা

অদ্য ১৯/০৩/২০২১ ইং তারিখ ১০.৩০ ঘটিকার সময় বগুড়া জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম বার মহোদয়ের নির্দেশে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন) জনাব আলী হায়দার চৌধুরীর নির্দেশনায়, ডিবি বগুড়া’র ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের তত্তাবধায়নে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ এমরান মাহমুদ তুহিন এসআই মোঃ শওকত আলম সহ ডিবির একটি চৌকস টিম বগুড়া জেলার গাবতলী থানাধীন রামেশ্বরপুর নিশুপাড়া গ্রামের ছয় বছরের শিশু মোঃ হানজালাল হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করে মূল আসামীকে গ্রেফতার করে।

আটককৃত আসামীর নামঃ

১। মোঃ মনজু মিয়া (৩৪), পিতা মোঃ আব্দুল জব্বার প্রাং, সাং রামেশ্বরপুর নিশুপাড়া, থানা গাবতলী, জেলা বগুড়া।

আটককৃত ব্যক্তির হেফাজত হইতে উদ্ধারকৃত আলামতঃ

ক) অপহরণ পূর্বক মুক্তিপন দাবি করিয়া হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি SYMPHONY মোবাইল ফোন।
খ) মুক্তিপনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি গ্রামীনফোন সিমকার্ড।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃত আসামী জানায় যে, মাদক সেবনের টাকা সংগ্রহ এবং সল্প সময়ের মধ্যে নিজের আর্থিক অবস্থা পরিবর্তনের জন্য শিশু হানজালালকে অপহরন পূর্বক হত্যা করার জন্য ঘটনার বিশ দিন পূর্বে পরিকল্পনা করে। সেই মোতাবেক আসামী সুযোগের অপেক্ষায় থাকে। গত ইং ১৩/১২/২০২০ খ্রিঃ দুপুর ০৩.০০ ঘটিকার সময় শিশু হানজালালকে খুঁজে না পাওয়া যাচ্ছিলো না। উক্ত সময় আসামী তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নিশুপাড়া বাজারস্থ ঔষধের দোকানে মাদক দ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করিতেছিল এমন সময় আসামী সুকৌশলে শিশু হানজালালকে দোকানে ডেকে নেয় এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন শিশুটিকে দিলে মোবাইল ফোন চাপাচাাপি করাকালিন সময়ে আসামী তার দোকানের সাটার নামিয়ে দেয়। পরবর্তীতে আসামী শিশু হানজালালের সামনে মাদক সেবন করাকালে তাকে অপহরণ পূর্বক মুক্তিপণ দাবির পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক আসামী শিশুটিকে তার দোকানে থাকা স্কসটেপ মুখে লাগানোর চেষ্টাকালে শিশুটি চিৎকার সহ ছোটাছুটি শুরু করলে আসামী হাত দিয়ে শিশুটির গলা টিপে শ্বাসরোধ পূর্বক হত্যা করে এবং শিশু হানজালালের লাশ বড় পলিথিনের ব্যাগে মোড়াইয়া স্কসটেপ দিয়ে পুরো শরীর মোড়াইয়া মমির ন্যায় তৈরি করে তার দোকানের কাঠের র‌্যাকের নিচের একটি তাকের মধ্যে লুকাইয়া রেখে লাশ গুম করার পরিকল্পনার জন্য দোকান বন্ধ করে বাড়িতে চলে যায়। বাড়ি হইতে একটি প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে দোকানে ফিরে এসে লাশটি বস্তায় ভরে এবং রাত্রী ০৩.৩০ ঘটিকার সময় বস্তা মধ্যে তিনটি ইট দিয়ে শিশু হানজালালের লাশ ঘটনাস্থলের অদূরে সিমেন্ট দ্বারা তৈরি রেলিংয়ের পিছনে পুকুরের পানিতে লাশটি লুকাইয়া রাখে। ঘটনার কয়েকদিন পর শিশু হানজালালের লাশের সন্ধান না হইলে গত ১৯/১২/২০২০ তারিখে আসামী বগুড়া শহরস্থ পৌর পার্কে অবস্থানরত এক পা পঙ্গু আনন্দ কুমার দাশ নামে একজন ব্যক্তিকে প্রথমে দশ টাকা ভিক্ষা দেয় এবং পরে পঙ্গু ভাতা প্রদানের প্রলোভন দেখিয়ে তার ভোটার আইডি কার্ড ও আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে সাতমাথা এলাকা হইতে গ্রামীন সিম সংগ্রহ করে আলআমিন কমপ্লেক্স এর একটি দোকান হইতে ম্যাজিক ভয়েজ সিস্টেমের একটি SYMPHONY মোবাইল ফোন ক্রয় করে ৫,০০.০০০/- টাকা মুক্তিপন দাবি করে হানজালালের মাকে অপহরণকারী চক্রের সদস্য পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল । বিষয়টি জেলা পুলিশের দৃষ্টিগোচরে আসিলে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ শুরু করে। পরবর্তীতে ইং ২১/০১/২০২১ খ্রিঃ তারিখ অপহরনকারী চক্রের সদস্য পরিচয়ে মোবাইল ফোনে হানজালালের মাকে জানায় তার সন্তানের লাশ পুকুরের পাশে পানিতে রাখা আছে।