নন্দীগ্রামে চাঁদা না দেয়ায় মৃত্যু মাকে দেখতে এবং মাটিও দিতে না দেওয়ার অভিযোগ

177

নন্দীগ্রাম বগুড়া প্রতিনিধিঃ—বগুড়ার নন্দীগ্রামে চাঁদার ৫ লক্ষ টাকার ১ লক্ষ টাকা পরিশোধ করলেও বাঁকি ৪লক্ষ টাকার জন্য এক সন্তানকে তার মরা মায়ের মুখ শেষবারের মত দেখতেও দেয়নি এমনকি মায়ের কবরে মাটিও দিতে দেয়নি। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা ভাটগ্রাম ইউনিয়নের বর্ষণ গ্রামে। এবিষয়ে থানায় অভিযোগ সহ মায়ের কবরে মাটি দিতে পুলিশের সহযোগীতা কামনা করেছে ভুক্তভোগী বর্ষণ গ্রামের নছির উদ্দিনের ছেলে মোজাম্মেল হক। অনুসন্ধানে জানা যায়, ৪ বছর পূর্বে বর্ষণ গ্রামের মোকছেদ আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৩৫) কে ইয়াবা সহ গ্রেপ্তার করে নন্দীগ্রাম থানা পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের বিষয়ে একই গ্রামের মোজাম্মেলের ছেলে আমিনুল ইসলাম পুলিশকে সহযোগিতা করেছে এমন সন্দেহে রফিকুল জেল থেকে বের হয়ে এসে তার বাবা মোকছেদ আলী (৫৫) ও ভাই কামরুল ইসলাম (৩০) সহ তাদের পোষা সন্ত্রাসীরা মোজাম্মেলের পরিবারের কাছ থেকে ৫লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে তাকে সহ তার পরিবারের সদস্যদের মারধর ও নির্যাতন করে এক কাপড়ে গ্রাম থেকে বের করে দিয়ে, বাড়িতে লুটপাট চালিয়ে স্বর্ণ, খাট, শোকেস সহ বাড়ির সমস্ত আসবাবপত্র প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মালামাল গ্রামেই বিক্রি করে দেয়। পরবর্তীতে রফিকুলের ফুপার মাধ্যমে চাঁদার ১ লক্ষ টাকা তাদের দিলেও বাকি ৪ লক্ষ টাকা পরিশোধ না করায় মোজাম্মেলের পরিবারকে ৪বছর যাবৎ গ্রামে ঢুকতে দেয়না। গ্রামে তাদের কোন আত্মীয় স্বজন মারা গেলে মাটিও দিতে দেয়না। চাঁদাবাজদের ভয়ে মোজাম্মেল হক পরিবার নিয়ে পলাতক থাকা অবস্থায় গ্রামে যখন তার মা মারা যায় তখন চাঁদাবাজরা তার মাকে মাটি দিতে দেয়নি এমনকি শেষবারের মত মরা মায়ের মুখটা পর্যন্ত দেখতে দেয়নি। এবিষয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, গ্রামে আমার মা মারা গেলে আমি মাকে শেষ দেখা দেখতে ও মাটি দিতে গ্রামে গিয়েছিলাম, মায়ের লাশের কাছে পৌঁছাতেই মোকছেদ আলী, রফিকুল, কামরুল সহ তাদের পোষা সন্ত্রাসীরা মাটি দিতে আসা সকলের সামনেই রামদা, হাসুয়া, চাকু নিয়ে আমার উপর হামলা করে, এ সময় উপস্থিত মাকে মাটি দিতে আসা লোকজন আমাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে, তারা আমার মাকে শেষ দেখা দেখতে দেয়নি এমনকি আজ পর্যন্ত মাটিও দিতে দেয়নি। এবিষয়ে মঙ্গলবার (২৯শে মার্চ) বিকেলে তার ছেলে আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ ও মায়ের কবরে মাটি দিতে পুলিশের সহযোগীতার আবেদন করেছেন বলে জানান তিনি। উক্ত বিষয়ে সকল গ্রামবাসী জানান, ঘটনাটি সত্য। চাঁদার দাবীতে মোজাম্মেলের বাড়িঘর লুটপাট করে গ্রামে বিক্রি করে দিয়েছে। মোজাম্মেলের বাড়ির আসবাবপত্র গ্রামের অনেকের বাড়িতে এখনও আছে। দীর্ঘ ৪বছর যাবৎ মোজাম্মেলের পরিবারের কাউকে গ্রামে ঢুকতে দেয়না, তার মরা মায়ের মুখ শেষ বারের মত দেখতে দেয়নি এবং মায়ের কবরে মাটিও দিতে দেয়নি, মোজাম্মেলের পরিবার গ্রামে কোন আত্মীয় স্বজন মারা গেলে মাটিও দিতে পারেনা, এক কথা এসব চাঁদাবাজরা মোজাম্মেলের পরিবারকে গ্রামে ঢুকতেই দেয়না। গ্রামবাসী আরো জানান, ২বছর পর মোজাম্মেলের স্ত্রী গ্রামে এসেছিলো, তারা তাকে ধরে মারধর করে এক হাত ভেঙে দিয়ে আটকে রেখেছিল পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে মেডিকেলে পাঠিয়ে দেয়। তারা এত ভয়ংকর থানার পুলিশ সহ তাদের দেখে ভয় পায়। উক্ত বিষয়ে নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপরাধি যত বড়ই শক্তিশালী হোক ছাড় পাবেনা।