সেই ভারতীয় জুয়াড়িকে সাকিবের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন হিথ স্ট্রিক?

147

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশ ক্রিকেটে এক আতঙ্কের নাম দীপক আগারওয়াল। এ নাম শুনলে টাইগারভক্তদের হৃদয়ে কাঁপন ওঠে।

ভারতের কুখ্যাত এই জুয়াড়ির কারণেই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এক বছর নিষিদ্ধ ছিলেন।

২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল সাকিবের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বরে কল করে অনৈতিক প্রস্তাব দেন দীপক আগারওয়াল। আগারওয়ালের সেই প্রস্তাবে কানই দেননি সাকিব। বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে আইসিসিকে এ বিষয়ে কিছুই জানাননি।

দুই বছর পর প্রশ্ন উঠেছে— কীভাবে কুখ্যাত ওই জুয়াড়ি সাকিবের ফোন নম্বরটি পেল?

সাকিবের নিষেধাজ্ঞার সময় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসি বলেছিল— সাকিবের ফোন নম্বর তারই কাছের কেউ আগারওয়ালকে দিয়েছেন। কিন্তু কে সেই ব্যক্তি সেটি তখন খোলাসা করেনি আইসিসি।

এবার জানা গেল, সাকিবের ফোন নম্বরটি আগারওয়ালকে দিয়েছিলেন হিথ স্ট্রিকই।

হিট স্ট্রিকের বিরুদ্ধে আনা গুরুতর সব অভিযোগের তদন্তে নেমে আইসিসির কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য আসে, যা শুনলে যে কারও চোখ কপালে উঠবে।

আইসিসি বলছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আগারওয়াল প্রথম স্ট্রিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জিম্বাবুয়েতে টি-টোয়েন্টি লিগ আয়োজন করে টাকা আয়ের প্রস্তাবের মাধ্যমে দুজনের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। স্ট্রিকের কাছে তার দেশের বাইরের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর চান আগারওয়াল। তিনি তা দিয়েও দেন। দুজন মিলে টাকা আয়ের জন্য জুয়ার মতো অনৈতিক পথ বেছে নেন। বিভিন্ন দেশে কোচ থাকাকালীন টাকার বিনিময়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যফাঁস করতেন আগারওয়ালের কাছে। ২০১৭ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সময় ক্রিকেটারদের ভেতরের তথ্য আগারওয়ালের কাছে পাচার করতেন হিথ স্ট্রিক।

১৫ মাসের মতো জুয়াড়ি আগারওয়ালের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন হিথ স্ট্রিক। ওই সময়টায় জিম্বাবুয়ে, আইপিএল ও আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগ দলের কোচ ছিলেন হিট।

আইসিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘২০১৭ বিপিএলের সময় হিথ স্ট্রিককে দলের অধিনায়ক, মালিক আর ক্রিকেটারের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিতে বলেন দীপক আগারওয়াল। বিনিময়ে স্ট্রিককে প্রচুর অর্থের লোভ দেখান। সেই অর্থ পরে জিম্বাবুয়ের টি-টোয়েন্টি লিগে বিনিয়োগ করা হবে বলেও টোপ দেন আগারওয়াল। এভাবেই হিথ স্ট্রিকের কাছ থেকে আগারওয়াল সাকিবসহ অন্যান্য ক্রিকেটার ও বিপিএলের দলের মালিকদের নম্বর নেন। ’

আইসিসির দেওয়া তথ্যমতে, আগারওয়ালকে তিন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের ফোন নম্বর ও অন্যান্য মাধ্যমে যোগাযোগের ঠিকানা দেন স্ট্রিক। এদের মধ্যে একজন ছিলেন বাংলাদেশ দলের সেই সময়ের অধিনায়ক।

বিপিএল শেষ হওয়ার পর পর ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে শুরু হয় শ্রীলংকা ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ। সেই সিরিজ চলাকালীন জিম্বাবুয়ের কোচ ছিলেন স্ট্রিক।

আইসিসির তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে, সেই সিরিজে হিথ স্ট্রিক থেকে নম্বর নিয়ে সাকিবকে মেসেজ পাঠান আগারওয়াল। একই বছর ২৬ এপ্রিল আগারওয়াল আবার সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন সাকিব আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলছিলেন।

উল্লেখ্য ইতিমধ্যে সবধরনের ক্রিকেট কার্যক্রমের ওপর ৮ বছরের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন সাবেক বাংলাদেশ বোলিং কোচ ও জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হিথ স্ট্রিক। দুর্নীতি বিরোধী ৫ টি অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আইসিসির এন্টি-করাপশন কোডের পাঁচটি ধারায় অভিযুক্ত হওয়া স্ট্রিক সবকিছু স্বীকার করে নিয়েছেন। সেই স্বীকারোক্তির পর তাকে এমন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আইসিসি।