সোনাতলায় স্বর্ণের কারিগরকে জরিমানা করে তোপের মুখে ইউএনও

271

নুরে আলম সিদ্দিকী সবুজ স্টাফ রিপোর্টার

বগুড়ার সোনাতলায় স্বর্ণের দোকানের কারিগরকে জরিমানা করে তোপের মুখে পরেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া আফরিন। এ সময় উত্তেজিত জনগণের রোষানলের এক পর্যায়ে গাড়িতে অবস্থান নেন ইউএনও। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলা শহরের গাজীর মোড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, স্বর্ণের দোকানের কারিগর ফেরদৌস এক জোড়া নাকের ফুল দেয়ার অর্ডার পেয়ে দোকানের অর্ধেক সাটার খুলে কাজ করছিলেন। এমন সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসে মুখে মাস্ক না থাকায় ফেরদৌসকে দেড় হাজার টাকা জরিমানা করেন। ফেরদৌসের স্ত্রী তাৎক্ষনিকভাবে ধার-দেনা করে এক হাজার টাকা জোগার করে এনে দেন। কিন্তু বাকি ৫০০ টাকা না দিতে পারায় ফেরদৌসকে উপজেলা ভূমি সহকারী কর্মকর্তার গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া চেষ্টা করা হয়।

তখন স্থানীয় দোকানদার ও এলাকাবাসী ফেরদৌসকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করে। এর এক পর্যায়ে জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে ইউএনওর গাড়ি ঘেরাও করে ও হৈ-চৈ শুরু করে। বিষয়টি সামাল দিতে না পেরে ইউএনও গাড়িতে অবস্থান নিয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এ সময় স্থানীয়রা বলেন শহরের বড়-বড় কাপরের দোকানগুলো ও অন্যান্য পন্যসামগ্রীর দোকান খোলা থাকলেও সেগুলোতে প্রশাসনে কোন নজর নেই, নজর শুধু ছোট-ছোট দোকানগুলোর ওপর।

জরিমানার বিষয়ে স্বর্ণের কারিগর ফেরদৌস বলেন, খাওয়ার মত কোন টাকাপয়সা বাড়িতে নেই। একজন নাকের ফুল মেরামত করার জন্য ১০০ টাকা দিতে চেয়েছিলেন। এ জন্য দোকানের একটা সাটার খুলে কাজ করছিলাম। এই মূহুর্তে ইউএনও এসে প্রথমে মাস্ক নেই জানতে চায়। টেবিল থেকে মাস্ক বের করে দেখালেও তার সাথে থাকা একজন ব্যক্তিকে ১৫০০ টাকা জরিমানা ও ১৫ দিনের জেল দিতে বলেন। তাৎক্ষনিক আমার স্ত্রী জানতে পেরে ধারদেনা করে ১ হাজার টাকা জোগার করে দিলেও বাকি ৫০০ টাকা নিতে ও ১৫ দিনের জেল দিতে আমায় গাড়িতে উঠায়।

এসময় এলাকাবাসী আমাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও ইউএনও ম্যাডাম আমার কোন কথাই শোনেননি। তখন লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিনকে গাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এ সময় সোনাতলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রেজাউল করিমসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যদেরকে ঘটনাস্থলের দোকানদার ও সাধারণ মানুষদের বিভিন্ন দিক-নির্দেশনামূলক কথা বলে সান্তনা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

জানতে চাইলে সোনাতলা ওসি মো. রেজাউল করিম বলেন, উপজেলার গাজীর মোড় স্থানীয় লোকজন উত্তেজনা সৃষ্টি করছে এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমরা আসি। সেই সময় ইউএনও মহোদয় তার গাড়িতে বসে ছিলেন। পরে লোকজনের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।।