বগুড়ায় ভুয়া পরিচয়ে তিন বিয়ে : চতুর্থ ‘নারী’র কাছে এসে দেখলেন পুলিশ!

201

স্টাফ রিপোর্টার

শিশুকন্যার বয়স যখন চার বছর তখন অসৎ চরিত্রের অপবাদ দিয়ে প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স। ডিভোর্সের পরপরই দ্বিতীয় বিয়ে। এরপর দ্বিতীয় স্ত্রীকে ডিভোর্স না দিয়ে শুধু সম্পর্ক ছিন্ন করে নাম-পরিচয় গোপন রেখে ভুয়া পরিচয়ে তৃতীয় বিয়ে। আর বিয়েগুলো হয়েছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে।

চতুর্থ নারীর সঙ্গে দেখা করতে এসে পুলিশের ফাঁদে ধরা খেলেন আবু রায়হান মনির (২৭)।

আবু রায়হান মনির বগুড়া সদরের আকাশতারা গ্রামের সেনাসদস্য (অব.) আব্দুর রহমানের ছেলে। মনির বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (বিট) বগুড়া থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার পাসের পর একটি কসমেটিকস কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে কর্মরত।

তৃতীয় স্ত্রীর করা প্রতারণা মামলায় গ্রেফতারের পর আবু রায়হান মনিরকে শনিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে শাজাহানপুর থানা পুলিশ।

থানা সূত্রে জানা যায়, আবু রায়হান মনির সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শাজাহানপুর উপজেলার টেকুরগাড়ী গ্রামের অনার্স চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর তার আসল নাম-পরিচয় গোপন করে ভুয়া পরিচয়ে ২০২০ সালের জুনে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কৌশলে শাশুড়ির কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয় মনির। এরপর মনিরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে থানায় নারী ও শিশু ডেস্কে সহায়তা চায় মেয়েটি। নানা কৌশল অবলম্বন করে অবশেষে হোয়াটসঅ্যাপে নারী সেজে প্রেমের অভিনয় করে ফাঁদে ফেলে শুক্রবার মনিরকে বগুড়া সাতমাথা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশের নারী ও শিশু ডেস্কের কর্মকর্তা এসআই জেবুন্নেছা জানান, আবু রায়হান মনিরকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে তার প্রতারণার অজানা তথ্য।

২০১২ সালে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার নিশি আকতার নামে এক নারীকে প্রথম বিয়ে করে। সংসার জীবনে তাদের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। শিশুকন্যার বয়স যখন চার বছর তখন অসৎ চরিত্র অপবাদ দিয়ে স্ত্রীকে তালকা দেয় মনির। এরপর ২০১৭ সালে বগুড়া সদরের পীরগাছা এলাকার সানজিদা নামে আরেক নারীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে দ্বিতীয় বিয়ে করে। এই সংসারও বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। স্বার্থ ফুরিয়ে গেলে তাকে তালাক না দিয়ে শুধু সম্পর্ক ছিন্ন করে তৃতীয় বিয়ের পিঁড়িতে বসে মনির। কিন্তু বিধিবাম। তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করে শেষ রক্ষা হলো না নারীলিপ্সু এই যুবকের।

তাকে ধরতে চতুর্থ নারী হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে এক নারীকে প্রেমিকা সাজিয়ে দেখা করার জন্য ডেকে এনে গ্রেফতার করা হয়েছে।

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গ্রেফতার আবু রায়হান মনির একজন প্রতারক শ্রেণির যুবক। মামলার পর তাকে আদালতের মাধ্যমে হাজতে পাঠানো হয়েছে।