শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে বগুড়ায় মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত

297

স্টাফ রিপোর্টার

স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে বগুড়ার প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় সোমবার (২৪মে) বেলা ১১টায় এক শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করে বগুড়ার সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব প্রধান এবং সমাবেশ পরিচালনা করেন একই কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোঃ ছাব্বির আহম্মেদ।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, আইআইটিবি বগুড়ার শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বগুড়া শহর শাখার সমন্বয়ক আনিসুর রহমান, সরকারি শাহ সুলতান কলেজের শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ বগুড়া সদর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মোঃ ফরহাদ আলী, সমন্বিত ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী আন্দোলনের নেতা রাকিবুল ইসলাম।

সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি ধনঞ্জয় বর্মন, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্য এবং বগুড়া জেলা সংসদের সভাপতি মোঃ সাদ্দাম হোসেন।

বক্তারা বলেন, “কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বড় অংশই নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। এসব শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন শেষে পরিবারের হাল ধরতে হয়। এভাবে বছরের পর বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দুর্দশা চরমে পৌঁছেছে। তাদের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। এ পরিস্থিতিতে আন্দোলনে ছাড়া সামনে কোনো পথ খোলা নেই তাই আজ আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে বগুড়ার সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও সমাবেশে দাঁড়িয়েছি।

সরকার করোনা সংক্রমণের অজুহাতে বারবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বৃদ্ধি করছে। তারা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়ার কথা বলছে। আমরা মনে করি এটা কেবল মুখের বুলি ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ গত মার্চ মাসে যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবিতে সারাদেশে জোরালো আন্দোলন শুরু হয় তখন শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন ১৭ মে হল ও ২৪ মে ক্যাম্পাস খুলে শিক্ষা-কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হবে। তার আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

আমরা দেখলাম সরকার হাতে দু-মাস সময় পেয়েও এখন পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনেনি। তারা যদি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি সত্যিই গুরুত্ব দিয়ে থাকেন তাহলে ভ্যাকসিন দেয়ার ক্ষেত্রে কেন এখনও তাদের প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে না? সরকারের এসব কাজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

লকডাউনে জনসাধারণের ভোগান্তির পাশাপাশি দেশে অচল হয়ে পড়ে আছে শিক্ষা ব্যবস্থা।অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠান খোলা হলেও অযৌক্তিকভাবে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো। অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠানের ন্যায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও খোলা সম্ভব, নেওয়া সম্ভব ক্লাস-পরীক্ষা।

দেশের ভবিষ্যত কান্ডারী শিক্ষার্থী সমাজকে ভেঙে দেওয়ার পায়তারা রুখে দিন। সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব। বক্তারা আরো বলেন অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবি না মানা হলে পরবর্তীতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

সমাবেশে সরকারি আজিজুল হক কলেজ, সরকারি শাহ সুলতান কলেজ, বগুড়া সরকারি কলেজ, বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, আইআইটিবি সহ বগুড়ার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।।