সোনাতলা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টারের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তির অভিযোগ

404

নুরে আলম সিদ্দিকী সবুজঃ স্টাফ রিপোর্টারঃ বগুড়ার সোনাতলা রেল স্টেশন মাস্টার রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কটুক্তির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সাংবাদিকদের নিকট এ বিষয়ে মৌখিক ভাবে জানিয়েছেন ও অডিও রেকর্ড উপস্থাপন করেছেন ওই রেল স্টেশনের পয়েন্টস্ম্যান সুশিল কুমার দাশ। ওই অডিও রেকর্ডে স্টেশন মাস্টার রবিউল ইসলামকে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে ‘ওরা বাপবেটি, আমিতো স্বামী-বউ বানাইছি। হিন্দু মানুষের নাম মনে থাকেনা’ – এধরণের কথোপকথন শোনা যায়।

পয়েন্টস্ম্যান সুশিল কুমার দাশ জানান, ‘গত ১৭ মে বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট ডিভিশন কন্ট্রোল অফিস থেকে দায়িত্বরত সোনাতলা স্টেশন মাস্টার রবিউল ইসলামকে মোবাইল ফোনে টিকেট কাউন্টারের উপরে লাগানো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি তুলে ই-মেইলে পাঠাতে বলে। স্টেশন মাস্টার রবিউল ইসলাম স্টেশনে না থাকায় তিনি মোবাইল ফোনে দায়িত্বরত পয়েন্টস্ম্যান সুশিল কুমার দাশকে বঙ্গবন্ধুর ছবিটি তুলে পাঠাতে বলেন। মোবাইলে সুশিলকে নির্দেশনা দেয়ার সময় তিনি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটুক্তি করেন। তিনি মোবাইলে বলেন, ওরা বাপবেটি, আমিতো স্বামী-বউ বানাইছি। হিন্দু মানুষের নাম মনে থাকেনা।’ এই কথাগুলো সুশিলের মোবাইল ফোনে অটো রেকর্ড হয়ে থাকে। কয়েকদিন পরে তিনি পয়েন্টস্ম্যান সুশিলকে ওই রেকর্ডটি ডিলিট করতে বলেন। সুশিল রেকর্ডটি পরে ডিলিট করবে বলে তাকে জানায়। রেকর্ডটি ডিলিট না করার কারণে স্টেশন মাস্টার রবিউল রাগান্বিত হয়ে ডিউটি করা সত্বেও গত ২৮ মে পয়েন্টস্ম্যান সুশিল দাশকে হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত হিসেবে দেখান। হাজিরা খাতায় সুশিলকে অনুপস্থিতি দেখানোর বিষয়টি গোপনে রেখে ৩০ মে সুশিলকে ডিউটি করান। ৩১ মে সোনাতলা রেল স্টেশনের অপর স্টেশন মাস্টার আমজাদ হোসেন লুকিয়ে রাখা অনুপস্থিতির বিষয়টি পয়েন্টস্ম্যান সুশিলকে অবগত করেন। দায়িত্ব পালন করা সত্বেও কেন তাকে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে সে বিষয়ে স্টেশন মাস্টার রবিউল ইসলামের নিকট জানতে চান পয়েন্টস্ম্যান সুশিল কুমার দাশ। এতে তিনি আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উর্ধতন কর্মকর্তাকে সুশিলের বিরুদ্ধে জানালে উর্ধতন কর্মকর্তা সুশিলকে কারণ দর্শাও নোটিশ (বুকআপ) প্রদান করেন। তখন পুরো বিষয়টি পরিস্কার করার জন্য সুশিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্টেশন মাস্টার রবিউল ইসলামের কথোপকথন প্রচার করে। অডিও রেকর্ডটি ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত রেল স্টেশন মাস্টার রবিউল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে তার কথোপকথনের বিষয়টিকে কম্পিউটারের মাধ্যমে কারসাজি করে তৈরি করা হয়েছে বলে শনিবার (৫ মে) একটি স্থানীয় পত্রিকায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে সোনাতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. মিনহাদুজ্জামান লীটন জানিয়েছেন, জাতির জনকের বিরুদ্ধে কটুক্তিমূলক বক্তব্যের আমি তীব্র নিন্দা জানাই। আশাকরি সংশ্লিষ্ট বিভাগের (রেলওয়ে) উর্ধতন কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’