আদমদীঘিতে বিলুপ্তীর পথে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ শিল্প

281

মোঃ শিমুল হাসান, আদমদীঘি (বগুড়), প্রতিনিধিঃ

বগুড়ার আদমদীঘিতে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ শিল্প এখন বিলুপ্তীর পথে। আবহমান গ্রাম বাংলার থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরী নানা ধরনের জিনিস পত্র। অভাবের তারনায় এ শিল্পের কারিগর রা বাপ দাদার পেশা ছেড়ে আজ অনেকে অন্য পেশায় ছুটছে। কিছু হাতে গোনা বাঁশ শিল্প কারীগররা অভাব অনটনের মাঝে আজও বাপ দাদার পেশা ধরে রেখেছে।

পুরুষদের পাশাপাশি সংসারের কাজ শেষ করে নারী কারিগররাও জীবিকা নির্বাহের জন্য ছেলে মেয়েদের নিয়ে শান্তিতে থাকতে অতি কষ্টে কাজ করছে তারা। বর্তমান বাজারে প্লাষ্টিক পণ্য ও আন্যান্য দ্রব্য মুলের সাথে পাল্লা দিতে না পারায় তাদের বাপ দাদার পেশায় মুখ থুবরে পড়েছে। বাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব বাঁশ শিল্পের সাথে আদমদীঘি উপজেলা সান্দিড়া, বড় আখিড়া ও উজ্জলতা গ্রামের ৪০টি পরিবারের নারী ও পুরুষ বাঁশ শিল্প কারিগরদের ভাগ্যে নেমে এসছে চরম অবস্থা। তাদের পূর্ব পুরুষের এ পেশা আকড়ে ধরে রাখার আপ্রান চেষ্টা করে ও হিমছিম খাচ্ছে। উপজেলা সহ দেশের ঘরে ঘরে ছিল বাঁশের তৈরী সামগ্রীর কদর। কালের পরিবর্তের সাথে সাথে বিশেষ আর চোখে পড়ে না এ শিল্পের কারিগরদের নিপুন হাতে বোনা সব আসবাবপত্র। অপ্রতুল ব্যবহার আর বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারনে বাঁশ শিল্প আজ হুমকির মুখে। এসব বাঁশের তৈরী সামগ্রী বাচ্চাদের দোলনা, তালায়, র‌্যাখ, পাখা, ঝাড়ু, টোপা, ডালী, কুলা, চালন সহ বিভিন্ন প্রকার আসবাবপত্র গ্রামঞ্চলে বিস্তার ছিল। যে বাঁশ এক সময় ৮০ থেকে ১০০ টাকায় পাওয়া যেত সেই বাঁশ বর্তমান বাজারে কিনতে হচ্ছে ৩শত থেকে ৪শত টাকায়। বাশের দাম যে পরিমানে বেড়েছে সেই পরিমান বাড়েনি এসব পূণ্যের দাম। জনসংখ্যা বৃদ্ধি সহ ঘর বাড়ী নির্মানে যে পরিমান বাঁশের প্রয়োজন সে পরিমান বাঁশের ঝাড় বৃদ্ধি হচ্ছে না। সান্দিড়া গ্রামের কারিগর রইদাস ও অপেন দাস জানায়, তাদের গ্রামে প্রায় ২৫ টি পরিবার এ কাজে নিয়োজিত আছে। অতি কষ্টে বাঁশ শিল্প টিকে রাখতে ধার দেনা ও বিভিন্ন সমিতি থেকে বেশি লাভ দিয়ে টাকা নিয়ে কোন রকম বাপ দাদার পেশা আকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। শনিবার আদমদীঘি উপজেলা সদরের হাটে উজ্জলতা গ্রাামের বাঁশের শিল্প কারিগর ও বিক্রেতা আব্দুস সামাদ ও বড় আখিড়া গ্রামের উজ্জল চন্দ্রের সাথে কথা হলে তারা জানান, আগের মত বাঁশের তৈরী জিনিস আর মানুষ কিনে না। প্লাস্টিক পূর্ন হওয়াতে বাঁশের কদর কমে গেছে।