বগুড়ায় ব্রিটিশ ধাতব মুদ্রা তৈরী চক্রের এক প্রতারককে আটক করেছে র‌্যাব-১২

531

স্টাফ রিপোর্টার

পুরাতন ব্রিটিশ ধাতব মুদ্রা বা কয়েন দ্বারা বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার নিরীহ মানুষদের প্রতারিত করে আসছে এক প্রতারক চক্র। এই প্রতারক চক্র নিরীহ মানুষদের মাঝে অপপ্রচার করে বলে যে, এই ধাতব মুদ্রা যদি জাহাজে রাখা হয় তাহলে জাহাজ পানিতে ডুবে না, এটা দ্বারা বিমানকে নামিয়ে আনা যায়, যত বেশি এই মুদ্রা পানিতে ভেসে থাকবে তত দাম হবে এবং এসব নাসার স্যাটালাইটের কাজে লাগে। এ নেশায় বগুড়াসহ দেশের অনেক মানুষের পকেট কেটেছে এই প্রতারক চক্র। অনেক মানুষ এই প্রতারক চক্রের লোভে পড়ে পথের ফকির হয়েছে। পরে টাকা উশুলের ধান্দায় তারাও নেমেছে একই পথে। নেশা একটাই যদি ধাতব মুদ্রা পাওয়া যায়। এই ঘটনাটি র‌্যাব-১২, বগুড়া ক্যাম্পের গোয়েন্দা দলের নজরে আসে এবং ধাতব মুদ্রা প্রতারক চক্রকে আটক করার জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা চালায়। এক পর্যায়ে র‌্যাব ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন, (জি), বিএন এর নেতৃত্বে র‌্যাব-১২, বগুড়া ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল ০৩ জুলাই ২০২১ তারিখ রাত ২৩.০০ ঘটিকায় বগুড়া জেলার সদর থানাধীন শাপলা সুপার মার্কেট হতে প্রতারক চক্রের এক সদস্য মোঃ শাহীন ইমরান আলী (৫০), পিতা-মৃত আঃ ছাত্তার, সাং-লতিফপুর বিহারী কলোনী, থানা ও জেলা-বগুড়াকে সর্বমোট ৫৫ টি পুরাতন ব্রিটিশ ধাতব মুদ্রা (ঙহব ছঁধহঃবহ অহহধ-১০, টহরঃবফ ঝঃধঃবং ড়ভ অসবৎরপধ ঙহব উড়ষষধৎ-০৪, ঊধংঃ রহফরধ ঈড়সঢ়ধহু ড়হব অহহধ-১০, পাঁচ পয়সা-০৫, অস্পষ্ট লেখা মুদ্রা-১৬ এবং কোন ধরনের লেখা নাই-১০ টি মুদ্রা), মুদ্রা তৈরীর ছাচ, মোবাইল এবং নগদ ৩০,৩০০/- টাকাসহ গ্রেফতার করে। বিভিন্ন সোর্সের তথ্যমতে, প্রতারক শাহীন ও তার চক্রের প্রধান টার্গেট ছিল ধনী ও সাধারণ জনগণ। তারা বলতো, “ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ এই মুদ্রা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী ব্রিটিশ আমলে বাংলাদেশে বিভিন্ন সীমানা পিলারের মধ্যে পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক মার্কেটে এই ম্যাগনেটিক মুদ্রার মূল্য কোটি কোটি টাকা”। আমেরিকার নাসা এই মুদ্রার প্রধান ক্রেতা। আসামী কম মূল্যে এই কয়েন সংগ্রহ করছে। এভাবে এই চক্র বিভিন্ন মানুষকে নিঃস্ব করছে বলে জানা যায়। আসামী মুদ্রাগুলো বিভিন্ন ভাংগাড়ির দোকান থেকে ক্রয় করে কেমিক্যাল দিয়ে বিভিন্ন ছাপ দিয়ে রোদে শুকানোর পর আগুনে পুড়িয়ে এসিড দিয়ে নিমজ্জিত রেখে ধাতব মুদ্রা তৈরী করে। উদ্ধারকৃত ধাতব মুদ্রার মূল্যে কোটি কোটি টাকা বলে সে প্রতারণা করত। আসামী দীর্ঘদিন যাবত ধাতব মুদ্রা তৈরী করে এবং প্রতারক চক্রের মাধ্যমে এই মুদ্রা জনসাধারণকে অপপ্রচার করে বিক্রয় করে। আসামী এলাকায় প্রতারক বলে পরিচিত এবং তার বিরুদ্ধে এলাকার জনসাধারণের অনেক অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বগুড়া জেলার সদর থানায় সোপর্দ হয়েছে।