বগুড়ার শেরপুরে এসিল্যান্ডের হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো বালু উত্তোলন

258

মোঃ জাকির হোসেন শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ার শেরপুরে বাঙালী নদীতে খননযন্ত্র (শ্যালোমেশিন) বসিয়ে আবারো উপজেলার খামারকান্দি ও খানপুর ইউনিয়নের নলডিঙ্গি ও গজারিয়া-বড়ইতলী গ্রামের বাঙালী নদী থেকে এ বালু তোলা হচ্ছে। এমন খবর প্রকাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সহকারী কমিশনার ভূমি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সাবরিনা শারমিন মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বালু উত্তোলন বন্ধ করেন। উল্লেখ্য যে, বালু উত্তোলনকারীরা সবাই তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখের ব্যবহৃত সরকারি গাড়ি ভাংচুর মামলার আসামী।

জানা যায়, ওই নদীতে মামলার আসামীদের অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে ৬ জুলাই মঙ্গবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) সাবরিনা শারমিন। ঘটনাস্থল থেকে বালু উত্তোলনের সরঞ্জামাদি ভাংচুর, মেশিন ও আড়াইহাজার ফুট পাইপ জব্দ করা হয়। তবে অভিযান চলাকালীন সময়ে বালু উত্তোলনকারীদের কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি প্রশাসন।
২০২০ সালের ৩ অক্টোবর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের নলডিঙ্গি গ্রামে বালু তুলতে বাধা দিতে এসে বালু দস্যুদের হামলায় ভাংচুর করা হয়েছিল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ি সহ এক কর্মচারী আহত হয়েছিল। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলার আসামীরাই আবার নতুন করে বাঙালী নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে।

স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের নলডিঙ্গি গ্রামের মো. মিলন, রাজু ও শফিকুল ইসলাম এবং খানপুর ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের মো. রুবেল বাঙালী নদীতে অবৈধভাবে বালু তোলার মেশিন বসিয়েছে। বাড়ি নির্মানের জন্য পুকুর ভরাটের জন্য প্রতিদিন তোলা হচ্ছে বালু। অন্তত দুই-তিনমাস ধরে উক্ত ব্যাক্তিরা বাঙালী নদীতে ভাসমান নৌকার ওপর শ্যালো মেশিন বসিয়ে প্লাস্টিক পাইপের মাধ্যমে নদীর ভূগর্ভস্থ থেকে বালু উত্তোলন করেছে। তোলা বালুর স্তুপ করা হয়েছে নদী থেকে অনেক দূরে। এখান থেকে সহজেই তারা বিক্রি করতে পারছেন।

বালু উত্তোলনকারী শফিকুল ইসলাম জানায়, তিনি তিন দিন আগে এই নদী থেকে বালু তোলা শুরু করেছেন। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে তিনি নদীর মধ্যে শ্যালো মেশিন বসিয়েছেন। খননযন্ত্রটি ধুনট উপজেলার এলাঙ্গি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মাসুদ রানার কাছ থেকে বালু তোলার জন্য ভাড়া নিয়েছেন।

রাজু আহম্মেদ বলেন, তার আরো দুই সহযোগি মো. মিলন ও রুবেল বাঙালী নদী থেকে বালু তুলে স্থানীয় মানুষজনের কাছে বিক্রি করে আসছেন। তারা সবসময় বালু তোলেন না। মানুষের প্রয়োজন হলে তখনই তারা নদী থেকে বালু তোলেন।

এলাকাবাসীরা বলেন, বাঙালী নদী থেকে এভাবে বালু তোলা হলে নদীর পাশে ফসলি জমিগুলো ভেঙে নদীতে বিলীন হবে। এখন বর্ষার সময়। পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে আমাদের ফসলি জমিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বাধা দিতে ভয় পাচ্ছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা. সাবরিনা শারমিন কথা বলা হলে তিনি বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। ঘটনাস্থল থেকে বালু উত্তোলনে সরঞ্জামাদি স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।