গাবতলীতে পানের সংগে বিষ মিশিয়ে ননদকে হত্যা, আটক ভাবী

477

মুহাম্মাদ আবু মুসা

বগুড়ার গাবতলীতে পানের মধ্যে বিষ মিশিয়ে শ্বশুর শ্বাশুরীকে হত্যা করার চেষ্ঠা করে ব্যর্থ হলেও অবশেষে ননদ সাথী বেগম (২৫) কে হত্যা করেছে পাষন্ড গৃহবধু পপি আক্তার (২২)। এমনি ধরনের ঘটনা ঘটেছে উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের ধোড়া মধ্যেপাড়া গ্রামে। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল বির্পোট করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক গৃহবধু পপি আক্তারের স্বামী আল আমিন মন্ডল বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার তার বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে হত্যার চেষ্ঠাসহ হত্যা করার অপরাধে থানায় মামলা দায়ের করেছে। এর প্রেক্ষিতে ঘাতক গৃহবধু পপি আক্তারকে তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, প্রায় ৪বছর আগে গাবতলীর ধোড়া মধ্যপাড়া গ্রামের মোজাম্মেল মন্ডলের ছেলে আল আমিন মন্ডল বগুড়া শহরের ২০নং ওয়ার্ডের বুজরুক বাড়িয়া (কাজিপাড়া) এলাকার জহুরুল ইসলামের কন্যা পপি আক্তারকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করে ঘর সংসার শুরু করে। ঘর সংসারের মাঝে তাদের ৩বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কিন্তু ওই গৃহবধু পপি আক্তার শ্বশুর শ্বাশুরীকে সহ্য করতে না পারায় মাঝে মধ্য ঝগড়ায় লিপ্ত হতো। শ্বশুর শ্বাশুরী নিয়মিত পান খাওয়ায় গৃহবধু পপি বুদ্ধি আঁটে তাদেরকে পানের মধ্যে বিষ মিশিয়ে হত্যা করার। এর এক পর্যায়ে গত ১৩জুলাই/২১ সকাল আনুমানিক ৮টায় ওই গৃহবধু পপি আক্তার শ্বাশুরী রাশেদা বেগম (৪৫) এর পানের বাটা বা ঝোলায় বেশ কিছু পানের মধ্য এবং জর্দ্দায় মাথার উকুন মারার ঔষধ মিশিয়ে দেয়। এর কিছুক্ষন পর শ্বাশুরী রাশেদা বেগম একটি পান খেলে তার দাঁতের মধ্য লাগলে ফেলে দেয়। পরে আরেকটি পান খেলে সেটাও দাঁতের মধ্য লাগলে ফেলে দিয়ে বাড়ির একটু বাহিরে গেলে তার শরীর কিছুটা অসুস্থ হওয়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে স্থানীয় ইউপি মেম্বারের উপস্থিতে ওই গৃহবধু পানের মধ্য বিষ মিশিয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করে। পরের দিন ১৪জুলাই/২১ আল আমিনের ফুফু নুরজাহান বেগম আরেকটি পান খেলে তারও দাঁতের মধ্যে লাগলে পানটি ফেলে দেয়। এ দিকে মা রাশেদা বেগমের অসুস্থতার খবর পেয়ে মেয়ে অর্থাৎ গৃহবধু পপি’র ননদ সাথী বেগম (২৫) তার শ্বশুর বাড়ি পাশ্ববর্তী মালিয়ানডাঙ্গা গ্রাম থেকে ১৪জুলাই/২১ সকাল ১০টায় বাবার বাড়ি ধোড়া গ্রামে আসে। সাথী বেগমও নিয়মিত পান খাওয়ার কারনে একটি পান খেলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার অবস্থা আরো খারাপ হওয়ায় ওই দিন বিকেল ৪টায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিনগত রাত সাড়ে ১০টায় ননদ সাথী বেগম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মৃত সাথী বেগমের ছয় বছরের এবং এক বছরের ২টি পুত্র সন্তান রয়েছে। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম এর সাথে কথা বললে তিনি উপরোক্ত তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, গ্রেফতার হওয়া গৃহবধু পপি আক্তার দোষ স্বীকার করে জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট বিজ্ঞ বিচারক মমিন হাসান এর আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে। এ বিষয়ে মামলার বাদী আল আমিন মন্ডলের সাথে কথা বললে তিনি উপরোক্ত ঘটনা এবং মামলা দায়ের করার কথা স্বীকার করেছেন।