ধুনটে শিশু রাখি হত্যার ঘটনা উম্মোচন

255

এম.এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টার। বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ১ মাস ৭ দিনের শিশু বাচ্চা রাখির হত্যার ঘটনা উম্মোচন করেছে থানা পুলিশ। রবিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে থানা চত্বরে এক প্রেস বিফ্রিং এ ঘটনার রহস্য উম্মোচন করেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা।

বিফ্রিং এ তিনি বলেন, ধুনট থানাধীন চান্দারপাড়া গ্রামে গত ১৮ জুলাই সকাল ১১টায় সংবাদ পাই যে, জৈনক আদুরি খাতুনের ১ মাস ৭ দিন বয়সী শিশু বাচ্চা রাখির লাশ তার মায়ের ঘরের ১০ গজ পূর্বে ল্যাট্রিনের ভিতরে পাওয়া গেছে। সংবাদ পেয়ে আমি সঙ্গীয় ইন্সপেক্টর তদন্ত জাহিদুল হক, এসআই রুহুল আমীন, আব্দুর রাজ্জাক, এএসআই রতন কুমার বর্মন ও আবু তাহের ঘটনাস্থলে গিয়ে ল্যাট্রিনের ট্যাংকির ভিতর থেকে শিশু বাচ্চা রাখির লাশ উত্তোলন করে সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পর্ন্ন করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি। খবর পেয়ে জেলার পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং রহস্য উম্মোচনের জন্য তিনি বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারি শিশুটি কয়েক দিন যাবত শ্বাস কষ্টে ভুগতে ছিলো। বাচ্চাটিকে তার মা, নানী চম্পা খাতুন ও বাবা অসিম ধুনট স্বাস্থ্যকপ্লেসে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলে চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। শিশুটি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মা জানতে পারে যে বাচ্চাটির হার্টে ফুটো হয়েছে বড় হলে প্রতিবন্ধি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তারা বাচ্চাটিকে পূর্নাঙ্গ চিকিৎসা না করে গত ১৬ জুলাই বাচ্চার মা আদুরি খাতুন বাচ্চাসহ তার মায়ের বাড়ি চান্দারপাড়ায় চলে আসে এবং বাচ্চাটিকে কবিরাজি চিকিৎসার জন্য একই এলাকার মৃত. রহিম উদ্দিন শেখের ছেলে কেছেম কবিরাজের শরণাপন্না হয়। গত ১৭ জুলাই সকাল ৯ টায় কেছেম কবিরাজের কাছে শিশু বাচ্চা রাখিকে নিয়ে যায় মা আদুরি খাতুন, বাবা অসিম ও নানী চম্পা খাতুন। কবিরাজ তাদের কে কলাপড়া, ফিটকারীর পানি পড়াসহ তাবিজ দেয়। সেই দিন বিকালে শিশুটির মা অাদুরি খাতুন কবিরাজের দেওয়া ফিটকারীর পানি নিজে পান করে ও অসুস্থ শিশু বাচ্চাকে খাওয়ায়। এতে শিশু বাচ্চাটি অসার হয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পরে বাচ্চার মা অাদুরি খাতুন নিজে তার মায়ের ঘরের ১০ পূর্বে ল্যাট্রিনের ঢাকনা উচু করে বাচ্চাটিকে ফেলে দেয় এবং পরে জ্বিনে নিয়ে গেছে এমন নাটক সাজায়। এ ঘটনায় গত ১৯ জুলাই বাচ্চার বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা অাসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা নং ১১। বাচ্চার মা আদুরি খাতুন কে সন্দেহ জনকভাবে গ্রেফতার করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বিকার করে এবং স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেওয়ার ইচ্ছা পোষন করলে গত ২৪ জুলাই শনিবার বিকালে ধুনট আমলী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় এবং পরে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করে। অাসামী আদুরি খাতুনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যার কাজে সহায়তা হিসাবে আসামী কেছাম উদ্দিন শেখ (৫০) কবিরাজকে গ্রেফতার করে বগুড়া আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যহত আছে।

প্রেস বিফ্রিংকালে উপস্থিত ছিলেন ইন্সপেক্টর তদন্ত জাহিদুল হক, এসআই রুহুল আমীন, আব্দুর রাজ্জাক, এএসআই রতন কুমার বর্মনসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।