নওগাঁয় ডিশ ব্যবসায়ী উজ্জল হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করলো পুলিশ: গ্রেফতার ২

333

সজীব হাসান নওগাঁ থেকে :
গত ২৫/০৭/২০২১ খ্রি. সকাল ৯ টায় নওগাঁ সদর থানাধীন বিল ভবানীপুর গ্রামের সরদার পাড়ায় একটি পাট ক্ষেতের মধ্যে ডিশ ব্যবসায়ী উজ্জল(২৫) এর গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখে লোকজন পুলিশে খবর দিলে পুলিশ সুপার প্রকৌশলী জনাব আবদুল মান্নান মিয়া বিপিএম মহোদয়ের দিক নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) জনাব একেএম মামুন খান চিশতী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) জনাব মোঃ গাজিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর), জনাব সাবিনা ইয়াসমিন, ওসি সদর থানা জনাব নজরুল ইসলাম জুয়েল’সহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, সদর থানা এবং ডিবি পুলিশের কয়েকটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। জেলা পুলিশের চৌকস পুলিশ সদস্যরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ নৃশংস খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করে এবং এ হত্যা কান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত একই গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে সুজন(২৯) এবং সিরাজুল ইসলামের ছেলে শরিফ(২৫)’কে গ্রেফতার করে।
পুলিশের কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জানায় যে, নিহত উজ্জল ডিশ ব্যবসার পাশাপাশি সুদের ব্যবসা করত। সে মাদকাসক্ত ছিল এবং নিজেও গোপনে মাদক ব্যবসা করত। দীর্ঘদিন থেকেই হত্যাকারীদের কাছ থেকে উজ্জল সুদে ধার দেওয়া বাবদ এবং মাদক বিক্রির ত্রিশ হাজার টাকা পাওনা ছিল। এছাড়া ডিশ ব্যবসা নিয়েও তাদের সাথে উজ্জলের দ্বন্দ্ব ছিল। ঈদের পরের দিন দুপুরে খুনীরা স্থানীয় বাজারের একটি দোকানে একত্রিত হয়ে উজ্জলকে খুনের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী খুনিরা উজ্জলকে নেশা জাতীয় এম্পুল ইনজেকশন নেওয়ার কথা বলে গত শনিবার রাত সাড়ে আটটায় বিল ভবানীপুর গ্রামের একটি নির্জন মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে ডিপ টিউব ওয়েলের ড্রেনের উপরে তারা এম্পুল ইনজেকশন নেওয়ার জন্য বসে থাকে। পরবর্তীতে সেখানে শরীফ এবং সুজন যায়। তারা সবাই নেশাখোর ছিল। এম্পুল ইনজেকশন গ্রহণের একপর্যায়ে সুজন কৌশলে পেশাব করার নাম করে উঠে যায় এবং পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পিছন থেকে এসে ধারালো চাকু দিয়ে উজ্জলের গলায় সজোরে টান মারে। উজ্জল লাফালাফি শুরু করলে খুনিরা তার হাত পা চেপে ধরে তার গলা কেটে ফেলে। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য শরীফ তার কাছে থাকা আরেকটি চাকু দিয়ে উজ্জলের দু’পায়ের রগ কেটে দেয়। এরপর খুনিরা লাশ গুম করার জন্য পাশের একটি পাট ক্ষেতের মধ্যে লাশ ফেলে রেখে চলে যাওয়ার সময় পানির মধ্যে চাকু দুটি ফেলে দেয়। পরবর্তীতে রাতেই পুলিশ সুপার, নওগাঁ মহোদয়ের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মোঃ গাজিউর রহমান, ওসি সদর থানা নজরুল ইসলাম জুয়েল এবং মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই/মোঃ মাসুদ রানা’সহ পুলিশের একটি টিম খুনিদের সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় এবং খুনিদের দেখানো মতে স্থানীয় জনগণ চাকু দু’টি উদ্ধার করলে পুলিশ তা জব্দ করে।
উল্লেখ্য যে, এ হত্যাকান্ডে তিনজন খুনি সরাসরি অংশগ্রহণ করে। আরেকজন পলাতক রয়েছে। গতকাল বিজ্ঞ আদালতে হাজির করা হলে সুজন এবং শরিফ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।