২৩ বছর পর নেপাল থেকে ফিরে আসলেন বগুড়ার ধুনটের আমেনা !

508

এম,এ রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টার:
বগুড়ার আমেনা খাতুন (৮০) নামের এক নারী নিখোঁজ হওয়ার ২৩ বছর পর নেপাল থেকে ফিরছেন গত সোমবার নেপালের একটি বিশেষ বিমানে ঢাকার শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুপুর ১ টার দিকে ফিরে আসেন আমেনা বাংলাদেশ বাংলাদেশ । সরকারি সহযোগিতায় বিনা খরচে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আমেনা খাতুনের ভাতিজা মোঃ আব্দুল মাজেদ মাস্টার।
ভাতিজা মোঃ আব্দুল মাজেদ মাস্টার জানান,আমেনা খাতুন প্রায় ৪০ বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। তবে তার আগে তিনি আমজাদ হোসেন, ফটিক মিয়া ও ফরিদ মিয়া নামে তিন ছেলের জন্ম দেন। এরপর তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এরপর আম্বিয়া নামের তার আরেক মেয়ের জন্ম হয়। ১৯৯৮ সালে ফটিক মিয়া সৌদি আরবে যান। এই সময়ে আমেনা খাতুনও বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর আর তার কোনো খোঁজ মেলেনি। তখন থেকে আমরা ধরেই নিয়েছিলাম হয়তো তিনি মারা গেছেন।

তবে গত রোজার ঈদের আগে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) লোকজন আমেনা খাতুনের সন্তানদের সাথে যোগাযোগ করে জানান, আমেনা খাতুন নেপালে রয়েছেন। এরপর তার ছবি দেখায় তারা। ছবি দেখে আমেনা খাতুনের সন্তানেরা তার পরিচয় নিশ্চিত করেন। এরপর গত শুক্রবার নেপালে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর মাসুদ আলম আমেনার সন্তানদের সাথে ভিডিও কলে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেন। ভিডিও কলে আমেনা তার সন্তান ও স্বজনদের চিনতে পারেন।

এ বিষয়ে মাসুদ আলম গত শনিবার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, নেপালে ২২ বছর পর মায়ের সন্ধান পেলেন বগুড়ার আমজাদ হোসেন প্রামাণিক। ২৩ বছর আগে বগুড়ার ধুনট উপজেলার নিমগাছি ইউনিয়ন মাজবারি গ্রামের তার স্বামীর বাড়ি থেকে আমেনা খাতুন অভিমান করে নিরুদ্দেশ হয়ে যান । তার ৩ ছেলে ১ কন্যা সন্তানেরা তাকে খুঁজে না পেয়ে ধরে নিয়েছিলেন যে তাদের মা আর বেঁচে নেই । তাদের ভোটার আইডিতে মায়ের নাম পূর্বে মৃত উল্লেখ করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত আমেনা খাতুনের বয়স বর্তমানে প্রায় ৮০ বছর। তার বড় ছেলে আমজাদ হোসেনের বয়স এখন ৬০ বছর। গত ৬ সেপ্টেম্বর সম্পূর্ণ সরকারি খরচে নেপালে থেকে বাংলাদেশি দূতাবাসের তত্বাবধানে একটি বিশেষ বিমানে নেপাল থেকে ঢাকায় তার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করেন ।
আমেনা খাতুন এর ছেলে মেয়ে দীর্ঘদিন পর মাকে ফিরে পেয়ে আল্লাহতালার কাছে শুকরিয়া আদায় করছেন। বর্তমানে আমেনা খাতুন বগুড়া ধুনট উপজেলার চিকাশী ইউনিয়নের ছোট চাপড়া গ্রামের তার মেয়ের বাড়িতে অবস্থান করছেন।