গাবতলীতে চাতাল শ্রমিককে গলা কেটে হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন: গ্রেফতার-১

521

স্টাফ রিপোর্টার

বগুড়া জেলার গাবতলী থানার একটি চৌকস আভিযানিক দল কর্তৃক ক্লুলেস চাতাল শ্রমিক ইব্রাহিম (২২) হত্যাকান্ডের প্রধান অভিযুক্ত জাহিদ হাসান মামুন (১৯) কে গ্রেফতার,মালামাল উদ্ধার ও রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, নৃশংস এই হত্যাকান্ড গত ১৪/০৯/২১ খ্রীঃ সংগঠিত হয় এবং অতি অল্প সময়ের মাঝে বগুড়া জেলা পুলিশ আসামি গ্রেফতারসহ, মোটরসাইকেল উদ্ধার করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে।
এবিষয়ে আজ বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বিপিএম- প্রেসব্রিফিং করেন।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, মামলার ভিকটিম ইব্রাহিম হোসেন (২১), পিতা-আশরাফ আলী, সাং-ব্রাহ্মনবয়রা, ১নং চায়নাবাদ, থানা ও জেলা- সিরাজগঞ্জ একই ঠিকানার তাহার মামা মোঃ ছামসুল বারী (৩৫), পিতা-মৃত আবুল হোসেন বগুড়া জেলা শেরপুর থানাধীন মির্জাপুর গ্রামে মামার ধানের চাতালে ঘটনার ৩/৪ মাস পূর্ব হইতে ব্যবসা করে আসিতেছিল। ব্যবসার সুবাদে এলাকায় ঘোরা ফেরার কারণে স্থানীয় বখাটে মোঃ জাহিদ হাসান মামুন (১৯), পিতা-মোঃ হানিফ সোনার মাতা-মোছাঃ কাজলী বেগম, সাং-ফুলতলা (খন্দকারটোলা), থানা-শেরপুর, জেলা-বগুড়া সহ আরো কিছু বখাটে ছেলেদের সাথে বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ভিকটিম ইব্রাহিম হোসেন তার মামার ব্যবহৃত নীল রংয়ের এ্যাপাচী আরটিআর মটরসাইকেল নিয়ে ব্যবসায়ীক কাজে বিভিন্ন এলাকায় চলা ফেরা করিত। ঘটনার দিন গত ১৩/০৯/২০২১ তারিখ ভিকটিম ইব্রাহিমকে আসামী জাহিদ হাসান মামুন নতুন এক জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে শেরপুর হতে বগুড়া ডেকে নেয় এবং ভিকটিম ইব্রাহিম হোসেনকে নিয়ে বগুড়া শহর হতে মদ ক্রয় করে আরো কয়েক জন বন্ধু মিলে খাওয়ার কথা বলে কৌশলে গাবতলী থানাধীন মহিষাবান ইউনিয়নের পাঁচমাইল টু গোলাবাড়ী যাওয়ার পাকা রাস্তার দক্ষিন পাশে নিশিন্দারা গ্রামস্থ জনৈক মোঃ ফুটু এর গইই নামক পরিত্যক্ত ইটভাটার মধ্যে নিয়ে গিয়ে তথায় পূর্বেই উপস্থিত অন্যান্য আসামীগণ সহ মদ সেবন করে। অতঃপর মটরসাইকেল ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। উক্ত আসামীসহ তার অন্যান্য সহযোগী আসামীগণ ভিকটিম ইব্রাহিমের গলায় ধারালো ব্লেডের পোচ দিয়ে কাটা গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে মৃত ভেবে উক্ত স্থানে ফেলে রেখে ভিকটিম এর ব্যবহৃত মটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন নিয়ে চলে যায়। পরবর্তীতে আসামীরা চলে গেলে ভিকটিম নিজে জীবন বাঁচানোর জন্য ঘটনাস্থল হইতে দৌড়ে পাকা রাস্তা সংলগ্ন জনৈক সোহাগের মুদি দোকানের সামনে গিয়ে পড়ে যায় । তখন সোহাগ ভিকটিমের নিকট হইতে মোবাইল নম্বর নিয়ে তার বাবার নিকট এবং গাবতলী থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনে সংবাদ দিলে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম ইব্রাহিমকে গলা কাটা গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বগুড়ায় নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইং ১৪/০৯/২০২১ তারিখ ভোর ০৫.২০ ঘটিকার সময় মারা যায়। এই সংক্রান্তে বাদী অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে লিখিত এজাহার দায়ের করিলে সূত্রে বর্ণিত মামলাটি রুজু করা হয়।গাবতলী মডেল থানার মামলা নং-১৪, তাং-১৪/০৯/২০২১, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড।

বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার, জনাব সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, বিপিএম এর দিকনির্দেশনায়, জনাব আহমেদ রাজিউর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার, নন্দীগ্রাম সার্কেল, অতিরিক্ত দায়িত্বে গাবতলী সার্কেল নেতৃত্বে জনাব মোঃ জিয়া লতিফুল ইসলাম, অফিসার ইনচার্জ, গাবতলী মডেল থানা সার্বিক সহযোগীতায়, জনাব মোঃ জামিরুল ইসলাম পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সহ গাবতলী মডেল থানার একটি চৌকস টাম বিশ্বস্ত সুত্র ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকান্ডের সহিত জড়িত মূলহোতা মোঃ জাহিদ হাসান মামুন (১৯), পিতা-মোঃ হানিফ সোনার, মাতা-মোছাঃ কাজলী বেগম, সাং-ফুলতলা(খন্দকারটোলা), থানা-শেরপুর, জেলা-বগুড়াকে বগুড়া সদর থানাধীন নাটাইপাড়া ভাড়া বাসা হইতে গ্রেফতার করিয়া তার স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মটরসাইকেলটি নাটাইপাড়া আপন গ্যারেজ হইতে উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।

আসামী মোঃ জাহিদ হাসান মামুন(১৯), পিতা-মোঃ হানিফ সোনার, মাতা-মোছাঃ কাজলী বেগম, সাং ফুলতলা (খন্দকারটোলা), থানা-শেরপুর, জেলা-বগুড়াকে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে যে, সে নিজে এবং (তদন্তের স্বার্থে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক) অপরাপর সঙ্গীয় আসামীগণ সহ ডিসিষ্ট ইব্রাহিমকে কৌশলে হত্যা করে মটরসাইকেল এবং মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়।

সংবাদ সম্মেলনে বগুড়া জেলা পুলিশের পদস্থ কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।