শাজাহানপুরে বিরোধপূর্ণ জমি ইটের প্রাচীর দিয়ে দখলের চেষ্টা

490

শাজাহানপুর(বগুড়া)প্রতিনিধিঃ বগুড়ার শাজাহানপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিরোধপূর্ণ একটি জমিতে ইটের প্রাচীর দিয়ে দখল করার চেষ্টা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এসময় বাধা দিতে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে উভয় পক্ষকে আইন-শৃংখলা বজায় রাখতে নির্দেশ দেয় পুলিশ।

আজ বুধবার দুপুর ১টার দিকে উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের রহিমাবাদ দক্ষিণপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
ওই জমির মালিকানা দাবিদার ফুল মাহমুদ নামে এক ব্যক্তি জানান, তার শ্বশুড় মৃত মুনছুর রহমান ১৯৮৯ সালে রহিমাবাদ মৌজার বিভিন্ন দাগে মোট ১একর সাড়ে ৭৭শতক জমি তার চার মেয়ের নামে হেবাবিল এওয়াজ দলিল করে দেন। কিš‘ ওই জমির মধ্যে ৫ দাগে ৬২ শতক জমি একই গ্রামের মৃত মনসুর রহমানের ছেলে আবু তালেব ১৯৭২ সালের ৭সেপ্টেম্বর তারিখের একটি জাল দলিল সৃষ্টি করেন। পরবর্তিতে ১৯৯২ সালে ওই ৬২শতক জমি রহিমাবাদ সি-বøক গ্রামের আফজাল হোসেন খান নামে এক ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করে দেন। এরই মধ্যে ফুল মাহমুদের শ্বশুর মুনছুর রহমান শারিরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে বিছানায় শয্যাশায়ী হওয়ার সুযোগে ঠিকাদার আফজাল হোসেন খান ওই জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করে দখল করে নেন। এঘটনায় ২০১১সালে মুনছুর রহমানের চার মেয়ে ফাতেমা বিবি, আনোয়ারা খাতুন, রুজিনা আকতার ও মুনজিলা খাতুন দিং আদালতে মামলা (মামলা নং-২৩২/১১) দায়ের করেন। আদালত ২০১৫সালে ওই জমির উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারির পরও ঠিকাদার আফজাল হোসেন খান বিভিন্ন সময়ে ওই জমিতে একাধিকবার স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করেন। প্রতিবারই পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। একপর্যায়ে জমি রক্ষা করতে না পেরে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি গোপন করে একাধিক ব্যক্তির কাছে ওই জমি বিক্রি করে দেন। এক বছর আগে ঠিকাদার আফজাল হোসেন খান মারা গেছেন। এমতাবস্থায় উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের বিঞ্চপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে আব্দুল খালেক বুধবার(১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ওই জমি ক্রয় সূত্রে মালিকানা দাবী করে ইটের প্রাচীর দিয়ে দখল করার চেষ্টা করেন। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ এসে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে উভয় পক্ষকে আইন-শৃংখলা বজায় রাখতে নির্দেশ দেন।
ফুল মাহমুদ আরও জানান, আবু তালেব ১৯৭২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তারিখে যে দলিল সৃষ্টি করেছেন সেই দিনটি ছিল শুক্রবার। সরকারী ছুটির দিনে কিভাবে দলিল রেজিস্ট্রী হয়। তাছাড়া ওই দলিলের নাম্বার ১৪১৫৬ অনুযায়ী খোঁজ করে জানা গেছে, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার ছমিরন বেওয়া নামে এক নারীর নামে ওই দলিল রয়েছে। জাল দলিল সৃষ্টি করে দীর্ঘদিন ধরে তাকে হয়রানী করা হচ্ছে। পাশাপাশি আদালতের আদেশকেও অমান্য করছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
আব্দুল খালেক জানান, ঠিকাদার আফজাল হোসেন খানও তার স্ত্রীর কাছ থেকে ৪শতক জমি কিনেছেন। তার ক্রয়কৃত জমিতে তিনি প্রাচীর নির্মাণ করতে গিয়েছিলেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি তিনি জানতেন না বলেও জানান তিনি।
শাজাহানপুর থানার এসআই আরিফুল ইসলাম জানান, ৯৯৯ নাম্বার থেকে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আদালত থেকে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জমিতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে এবং উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে।
শাজাহানপুরে বিরোধপূর্ণ জমি ইটের প্রাচীর দিয়ে দখলের চেষ্টা