শিক্ষার্থীদের চুল কেটে দেয়া শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

269

মোঃ আল আমিন হোসেন, শাহজাদপুর ( সিরাজগঞ্জ ) প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কেটে দিয়েছেন এক শিক্ষক। এ ঘটনায় ‘অপমানিত‘ এক ছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আত্মহত্যার চেষ্টার খবর ছড়িয়ে পড়লে সোমবার রাত ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ওই শিক্ষকের অপসারণ দাবি করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলীসহ অন্য শিক্ষক ও কর্মচারীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। মঙ্গলবার সকালে ফের বিক্ষোভ শুরু হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের আত্মহত্যা চেষ্টার খবর ছড়িয়ে পড়লে সোমবার রাতেই ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ-মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। ওই শিক্ষকের অপসারণ দাবি করেন তারা।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলীসহ অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মচারিরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও সকালে ফের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু হয়।

ওই বিভাগের ছাত্র তানভীর ও জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত হওয়া পারীক্ষার সময়সূচি নিয়ে ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থীর বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এ সময় ওই শিক্ষার্থীদের চুল কেটে নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষার হলে যেতে বলেন ওই শিক্ষক।

পর দিন পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ১৪ জন ছাত্র চুল কেটে না আসায় তাদের মাথার সামনের অংশের চুল কেটে দেন তিনি।

অপমান সহ্য করতে না পেরে এ দিনের পরীক্ষা শেষে নাজমুল হোসেন তুহিন ছাত্রাবাসে গিয়ে তার কক্ষের দরজা বন্ধ করে বেশ কিছু ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মাহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি তার সহপাঠিরা টের পেয়ে দ্রুত তাকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী বলেন, ‘আমরা নাজমুলের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তার উন্নত চিকিৎসা চলছে। আশা করি সে ভাল হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবে।’

শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মনোয়ার হোসেন সুজন বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

বরীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এদিকে ছাত্রদের বিক্ষোভের বিষয়টি জানতে পেরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ ক্যাম্পাসে এসে ছাত্রদের বিচার দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং হলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
পরে শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে একটি স্মারকলিপি প্রদান করন।
এদিকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের উত্তপ্ত পরিস্থি দেখে ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে শাহজাদপুর মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস দ্রুত সরিয়ে তাদের নিজস্ব জায়গায় নেওয়ার আহ্বান জানান।