শাজাহানপুরে যুবদল নেতার মারপিটে পা হারালেন মানসিক প্রতিবন্ধি মেহেদী হাসান

213

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শাজাহানপুরে মেহেদী হাসান ওরফে রাজু (৩০) নামে একজন মানসিক প্রতিবন্ধিকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে এক পা ভেঙ্গে ফেলেছে মারুফ হোসেন (২৮) নামে এক যুবদল নেতা।
গুরুতর আহত অবস্থায় মেহেদী হাসানকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধিন থাকাকালিন সময়ে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত মঙ্গলবার বিকেলে তার ডান পা কেটে ফেলা হয়েছে।
প্রতিবন্ধি মেহেদী হাসান বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চোপীনগর ইউনিয়নের শাহনগর বিলায়েতপাড়া গ্রামের দিনমজুর আজাহার আলী ওরফে রাজা মিয়ার ছেলে। এঘটনায় মেহেদী হাসানের ভাই আলমগীর হোসেন বাদি হয়ে শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
যুবদল নেতা মারুফ হোসেন উপজেলার শাহনগর ডাক্তারপাড়া গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে। তিনি উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য। তার নামে থানায় একাধিক নাশকতার মামলাও রয়েছে।
আলমগীর হোসেন জানান, তার বড়ভাই মেহেদী হাসান একজন মানসিক প্রতিবন্ধি। ঝোঁপ-ঝাড়ে বাঁশের কঞ্চির খুঁটি গেড়ে প্লাষ্টিকের বস্তা দিয়ে ঘর বানিয়ে নিজের খেয়াল খুশি মত থাকতেন। গত ২০ আগষ্ট রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার প্রতিবন্ধি ভাই মেহেদী হাসান বাড়ির অদূরে বাঁশঝাড়ের ভিতর গিয়ে দেখেন তার ঝুপড়ি ঘরে যুবদল নেতা মারুফ হোসেনসহ ৪-৫ জন বসে আড্ডা দিচ্ছে। তখন তাদেরকে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বললে যুবদল নেতা মারুফ হোসেন তার ভাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরের দিন ২১ আগষ্ট মারুফ হোসেন লাঠি হাতে নিয়ে মেহেদী হাসানকে খুঁজতে থাকে। বেলা ৩টার দিকে ওই বাঁশঝাড়ের ভিতর মেহেদী হাসানকে একা পেয়ে লাঠি দিয়ে এলোপাথারি মারপিট করে। একপর্যায়ে পিটিয়ে ডান পায়ের হাটুর নীচে থেতলে পা ভেঙ্গে ফেলে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দীর্ঘ এক মাস চিকিৎসাধিন সময়ে বেশ কয়েকবার অস্ত্রপাচার করার পরও মাংস পঁচে খসে পড়তে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে গত মঙ্গলবার বিকেলে হাটুর উপর পর্যন্ত কেটে ফেলা হয়েছে। এর আগে গত ২৬ সেপ্টেম্বর শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত আসামীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
মেহেদী হাসানের বাবা আজাহার আলী ওরফে রাজা মিয়া জানান, মেহেদী হাসান ৪ বছর আগেও সুস্থ ছিলেন। পেশায় একজন দক্ষ রংমিস্ত্রি ছিলেন তিনি। ৪ বছর আগে তাকে বিয়ে করানো হয়। বিয়ের পর মেহেদী হাসানের মাথায় সমস্যা দেখা দেয়। ক্রমেই মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে বিয়ের এক বছর পর তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য এমরান হোসেন জানান, মেহেদী হাসানের স্বজনেরা এসে বিষয়টি জানালে তাদেরকে আইনের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।
এবিষয়ে যুবদল নেতা মারুফ হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মামলা হয়েছে। মামলার আসামীকে গ্রেপ্তার করতে জোর চেষ্টা চালছে।