শিবগঞ্জের বিহার ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাড়িঘর ভাংচুর, গুরুতর আহত-১

145

রশিদুর রহমান রানা শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ

বগুড়ার শিবগঞ্জের বিহার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১০/১২টি বাড়িঘর ব্যপক ভাংচুর ও মারপিট করে এক যুবকের হাত-পায়ের রগ কেটে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও তার সমর্থকের বিরুদ্ধে।

রবিবার দুপুরে বিহার ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ অফিসের পাশে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত যুবকের নাম রবিউল ইসলাম। তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী। বর্তমানে রবিউল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

জানতে চাইলে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্মরত মেডিকেল অফিসার ডা. জাহিদুল ইসলাম জুয়েল বলেন, ‘এই পর্যন্ত ছোট-খাটো আঘাত নিয়ে এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন ৩ জন এবং আরো তিনজন ভর্তি আছেন। এদের মধ্যে আবু সাঈদের (৫০) সারা শরীরে আইরন রড এই রকম কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। রেজাউল করিম (৩৮) নামের একজনের মুখে আঘাত আছে এবং সেখান থেকে রক্ত ক্ষরণ আছে। বিকেল ৪ টার সময় রবিউল ইসলাম নামে আরও একজন ভর্তি হয়েছেন তার হাতে-পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটার দাগ আছে।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার বিহার ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিদুল ইসলাম। তিনি আজকের (রোববার) সহিংসতায় আহত রবিউলের আপন ভাই শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামী। এ ছাড়া তার (মহিদুল) বিরুদ্ধে আরও একটি হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

মহিদুল ইসলাম আহত রবিউলের আপন ভাই শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি হওয়ার কারণে তার (রবিউল) পরিবার আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা মতিউর রহমানের পক্ষে কাজ করছিলেন।

রবিউলের ভাই বিহার ইউপি সদস্য আবু রায়হান জানান, এবার ভোটে প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই মহিদুল ও তার লোকজন এলাকার উশৃঙ্খল আচরণ শুরু করেন। ভোট না দিয়ে গ্রামে গ্রামে তান্ডব শুরু করা হবে বলে হুমকিও দেন তারা। এর ধারাবাহিকতায় তারা গত ১৭ অক্টোবর রাতে বিহার হাটে অবস্থিত আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর মোটরসাইকেল প্রতীকের অফিসে হামলা চালান। এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ২ জন আহন হন। ভাঙচুর করা হয় হাটের ওপরের কয়েকটি দোকান।

তিনি আরও বলেন, রোববার সকাল থেকে মহিদুলের লোকজন বিহার বাজারে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মারপিট শুরু করেন। পরে তাদের বাধা দিলে তারা বাজার ছেড়ে বিভিন্ন পাড়ায় ঢুকে তান্ডব শুরু করে। এক পর্যায়ে তার বাড়িতে হামলা করে সেখানে থাকা রবিউলকে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই হাত ও ডান পায়ের রগ কেটে দিয়ে নাগর নদীতে ফেলে দেন। একই সময় তাদের গ্রাম মোন্নাপাড়া ও আশপাশের অন্তত ১০/১২টি বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর করেন তারা।’

বিহার হাইস্কুল সংলগ্ন মুদির দোকানী আবু সাইদের মেয়ে তানজিলা অভিযোগ করে বলেন, মতিউর রহমান ও রায়হান মেম্বারের লোকজন আমার বাবার দোকানের মালামাল ভাংচুর করেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলাতে জেলা আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে সংগঠনের বর্ধিত এক সভায় হচ্ছিল। আমি ওই সভাতে ছিলাম। ওই সময় জানতে পারি অজ্ঞাত লোকজন আমার এক সমর্থকের দোকানে হামলা চালায়। এবং তাকে মারধর করে। রবিউলের হাত-পায়ের রগ কেটে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আমি ওই সময় বর্ধিত সভায় ছিলাম।

এ বিষয়ে কথা বলতে শিবগঞ্জ সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার তানভীর ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনও কোন মামলা হয়নি।