শেরপুরে ধর্ষণ মামলা করায় প্রাণনাশের হুমকি, নির্বিকার প্রশাসন

217

বগুড়ার শেরপুরে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার এই ব্যাপারে বাদীর পক্ষ থেকে অভিযুক্তের লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত তিন বছর আগে উপজেলার রামনগর গ্রামের মো. আবুল খায়েরের ছেলে রিপন আহম্মেদের (২৫) সঙ্গে দামুয়া গ্রামের মো. আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে সুমনা আক্তারের মোবাইলে পরিচয় হয়। এর পরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এর একপর্যায়ে রিপন আহম্মেদ বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সুমনার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে। সর্বশেষ গত ২৩ জুলাই রিপন আহাম্মেদ শেরপুর শহরের ধুনট রোডের তার এক দুলাভাইয়ের বাড়িতে কৌশলে ডেকে নিয়ে সুমনাকে ধর্ষণ করে। এর পর সুমনা বিয়ের কথা বললে রিপন অস্বীকৃতি জানায়। পরবর্তীতে সুমনা বিয়ের দাবিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁর প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেন। তখন এলাকার লোকজন ও রিপনের স্বজনেরা বিয়ের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করার প্রতিশ্রুতি দিলে তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। কিন্তু ঘটনার কয়েক দিন অতিবাহিত হলেও কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সুমনা শেরপুর থানায় রিপনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।

এদিকে মামলা করার পর পুলিশের উদাসীনতা নিয়ে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী সুমনা আক্তার। মামলার এক মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার ক্ষেত্রে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে পুলিশ। এমনকি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য অভিযুক্তের পক্ষ থেকে তাঁকে হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। এর প্রতিকার চেয়ে গত ২৫ অক্টোবর দুপুর ১২টায় শেরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেছেন নির্যাতিতা সুমনা। কিন্তু এর পরেও তার ওপর হুমকি প্রদর্শন থেমে থাকেনি। অভিযুক্তের পক্ষে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি রাতে বাড়ি গিয়েও তাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। তাই জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গত ৩১ অক্টোবর সুমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

ভুক্তভোগী সুমনা আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলা করার পরও আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাঁকে ধরার চেষ্টা করছে না। আবার মামলা না তুলে নিলে অভিযুক্তের পক্ষ থেকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। থানায় জিডি করার পরও পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে অনীহার কথা অস্বীকার করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রামজীবন ভৌমিক বলেন, পুলিশের বিরুদ্ধে অনীহার অভিযোগ সত্য নয়। অভিযুক্তকে প্রকাশ্যে ঘুরতে দেখা গেছে এমন তথ্য বাদীর পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়নি।

এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। অতিসত্বর অভিযুক্তকে আটক করা হবে।