বগুড়ায় প্রতারক চক্রের দুই সদস্য আটক: ‘ব্যারিস্টার’ পরিচয়ে টাকা হাতিয়ে নেন তারা

131

অনলাইন ডেস্ক

বগুড়ার শেরপুরে ‘ব্যারিস্টার’ পরিচয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই প্রতারকের বিরুদ্ধে। জায়গা-জমির বিরোধ নিষ্পত্তি ও মামলায় জিতিয়ে দেওয়াসহ নানা কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিতেন তারা।

এক পর্যায়ে তাদের প্রতারণার বিষয়টি ধরতে পারেন ভুক্তভোগীরা। আশ্রয় নেন থানা পুলিশের কাছে। পরে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় প্রতারক চক্রের ওই দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের ধাওয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হলেন- নাটোরের সিংড়া উপজেলার সোয়াইড বালালপাড়া গ্রামের ওসমান আলীর ছেলে মোজাম্মেল হক ওরফে রানা (৩৫) ও শেরপুর উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে আবু বকর সিদ্দিক ওরফে রাজু মন্ডল (৩৪)। এর মধ্যে মোজাম্মেল হক নিজেকে ব্যারিস্টার আর রাজু তার সহযোগী হিসেবে পরিচয় দিতেন।

তাদের বিরুদ্ধে বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে শেরপুর থানায় মামলা হয়েছে। উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের ধাওয়াপাড়া গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে রুবেল হাসান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ছয়মাস আগে প্রতারক চক্রের সদস্য মোজাম্মেল হক ও রাজু মন্ডলের সঙ্গে পরিচয় হয় ভুক্তভোগী রুবেল হাসানের। এরই সূত্র ধরে জমি-জমা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন তারা। প্রতারক মোজাম্মেল হক রানা নিজেকে হাইকোর্টের ব্যারিস্টার পরিচয় দিয়ে রুবেল হাসানের কাছ থেকে ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর মামলার খরচ বাবদ দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। পরবর্তীতে মামলার রায় পক্ষে নেওয়ার জন্য তার কাছ থেকে আরও এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকা নেওয়া হয়।

এছাড়া একই কায়দায় পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তির নামে ধাওয়া গ্রামের ফারুক হোসেনের কাছ থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা ও জায়গা-জমির কাগজপত্র ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে চল্লিশ হাজার টাকা তারা হাতিয়ে নেয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলার বাদী ভুক্তভোগী রুবেল হাসান জানান, ওই দুই ব্যক্তির কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নেই। এক পর্যায়ে তাদের কর্মকাণ্ডে সন্দেহ হয়। পরে তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে ঢাকায় হাইকোর্টে যাই। এরপর জানতে পারি মোজাম্মেল হক আইনজীবী বা ব্যারিস্টার কিছুই নয়। মূলত প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তার সহযোগী হলেন রাজু মন্ডল।

নিজেদের ব্যারিস্টারসহ একেক জায়গায় একেক পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়াই তাদের মূল পেশা। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ন্যায়বিচারের আশায় থানায় মামলা করেন বলে জানান তিনি।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, গ্রেফতাররা প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা মিলেছে। তাই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া প্রতারণার শিকার রুবেল হাসান তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা করেছেন। গ্রেফতারকৃতদের বুধবার দুপুরে বগুড়ায় আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।।