শিশুর কেটে ফেলা মাথা উদ্ধারের চেষ্টা চলছে

বগুড়ায় আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানকে গলা কেটে হত্যা, সেনা সদস্য গ্রেফতার

78

মুহাম্মাদ আবু মুসা

বগুড়ায় আবাসিক হোটেলে স্ত্রী-সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দী করে কক্ষে রেখে পালানোর সময় এক সেনা সদস্যকে আটক করা হয়েছে। রোববার বেলা ১১টার দিকে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলাধীন বনানী এলাকায় শুভেচ্ছা আবাসিক হোটেল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। আটক সেনা সদস্য আজিজুল হক (২৩) বগুড়ার ধুনট উপজেলার হেউটনগর গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে। তিনি সেনা সদস্য হিসেবে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে কর্মরত আছেন। তাঁর স্ত্রী আশামনি (১৯) বগুড়া শহরের নারুলী তালপট্টি এলাকার আসাদুল ইসলামের কন্যা। তাদের সন্তান ১১ মাস বয়সী আব্দুল্লাহ আল রাফী।
জানা গেছে, শনিবার রাত ৯টার দিকে আজিজুল নিজেকে মিরাজ এবং তার স্ত্রীকে তমা এবং তাদের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ পরিচয় দিয়ে হোটেলের ৩০১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আজিজুল হক রুমে ছেড়ে দেবে বলে ভাড়া পরিশোধ করতে চান। এ সময় হোটেলের ম্যানেজার তার স্ত্রী-সন্তান কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন তারা সকালে চলে গেছে। এ সময় ম্যানেজার কক্ষ দেখে বুঝে নেয়ার কথা বললে আজিজুল হক স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এ সময় হোটেল ম্যানেজার তাকে আটক করে থানায় খবর দেন। এ দিকে নিহত আশামনির বাবা আসাদুল বলেন, ‘তিন বছর আগে আজিজুলের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়। মেয়ে সন্তান প্রসবের আগে থেকেই আমার বাড়িতে থাকে। জামাই দুই মাসের ছুটিতে বাড়ি আসে। রোববার তার কর্মস্থলে চলে যাওয়ার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার জামাই আমার বাড়িতর আসে। সেখানে দুই দিন থাকার পর শনিবার বিকেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শহরে মার্কেট করার জন্য বের হয়।’
আসাদুল আরও বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে জামাই আমাকে ফোন করে জানায়, রাত ৮টার দিকে স্ত্রী-সন্তানকে নারুলী যাওয়ার জন্য রিকশায় তুলে দেয়। কিছুক্ষণ পর থেকে স্ত্রীর ফোন বন্ধ পাচ্ছে। আজ সকালে মেয়ের সন্ধান চেয়ে শহরে মাইকিং করার ব্যবস্থা করি। সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করতে গেলে বনানীতে হোটেলে মা এবং সন্তানের লাশ উদ্ধারের খবর পাই।’ এদিকে পুলিশ হোটেলে পৌঁছে সেনা সদস্য আজিজুল হককে হেফাজতে নেওয়ার পর তিনি পুলিশের কাছে স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। অপর দিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী। শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম শহিদ সাংবাদিকদের জানান, আজিজুল হক তার স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে এবং তার ছেলে সন্তানের কেটে ফেলা মাথা করতোয়া নদীতে ফেলে দিয়েছে বলে জানিয়েছে। শাজাহানপুর থানার ওসি আরো জানান, সার্বিক বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।