আদমদীঘিতে জমিতে বাদাম চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছে অনেক কৃষক

26

আদমদিঘী (বগুড়া) প্রতিনিধি:
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, পদ্মাসহ দেশের নদী এলাকায় সৃষ্ট চরের বালু মাটির বাদাম চাষ এখন আদমদীঘির দোআাঁশ মাটিতে হচ্ছে। অন্যান্য আবাদের তুলনায় অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন বাদাম চাষে। এখানকার নতুন এই ফসল বাদাম চাষ শুরু করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন আদমদীঘি উপজেলার কেশরতা গ্রামের কয়েকজন কৃষক। কেশরতা গ্রামের কৃষক ফিরোজ হোসেন গত বছর তার আড়াই শতকের একটি পতিত জমিতে পরীক্ষা মুলক ভাবে বাদাম চাষ শুরু করেন। তিনি সান্তাহার পৌর এলাকার একটি বীজ ভান্ডার থেকে বাদাম বীজ কিনে এনে আলু লাগানোর মতো করে বোপন করেন। ওই আড়াই শতক জমিতে তার খরচ হয়েছে মাত্র দেড়শ‘ টাকা। তিনি উক্ত জমি থেকে বাদামের ফলন পান শুকনো অবস্থায় ১৫ কেজি। সে তিন হাজার টাকায় ওই বাদাম বিক্রি করেন। এবার তিনি ছাড়াও একই গ্রামের বেলাল আকন্দ ৮শতক জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। তার দেড় কেজি বাদাম বীজ প্রয়োজন হয়েছে। জমিতে এই বাদাম চাষে মোট খরচ হয়েছে ১ হাজার টাকা। উৎপাদন হয়েছে ৮০ কেজি শুকনো বাদাম। তিনি ৮ শতক জমির বাদাম তুলে প্রতি কেজি ১৮০ টাকা দরে মোট ১৪ হাজার ৪শ টাকায় বাজারে বিক্রি করেন। এছাড়া কেশরতা গ্রামের বুলু মিয়া ও ইয়াছিন আলী তাদের নিজ নিজ কিছু পতিত জমিতে বাদাম চাষ করছেন। তারা জানান, যেসব জমির মাটিতে আলু লাগানো যায়, সেইসব বেলে দোআঁশ মাটি বাদাম চাষের জন্য উপযুক্ত। বাংলা মাঘ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ফাল্গুন মাসের পহেলা সপ্তাহের মধ্যে বাদাম বীজ বোপন করেন এবং ৯০ দিনে অর্থাৎ বাংলা জৈষ্ঠ মাসে বাদাম গাছ পরিপক্ক হলে জমি থেকে আলুর মতো করে বাদাম তোলা হয়। তারা আরও জানান, অন্য সকল আবাদের চাইতে বাদাম চাষ অধিক লাভ জনক, খরচ খুব কম, নামমাত্র রাসায়নিক সার প্রয়োজন হয়। ছাগল ভেড়া বাদাম গাছ খায়না। এই সব কারণে বাদাম চাষে আগ্রহ হচ্ছেন কৃষকরা। তারা আত্রাই নদী এলাকার দেশী জাতের বাদাম বীজকে এই এলাকার দোআঁশ মাটিতে উপযুক্ত বলে মনে করেন। কেশরতা গ্রামের কৃষকদের বাদাম চাষ করার ঘটনায় ইতিমধ্যে এলাকার অন্যান্য গ্রামের কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
প্রায় প্রতি দিনেই কৃষকরা জমিতে লাগানো বাদাম চাষ দেখতে আসছেন কেশরতা গ্রামে। আদমদীঘি উপজেলা কৃষি অফিসার মিঠু চন্দ্র অধিকার জানান, অত্র এলাকায় বাদাম চাষ একটি অপ্রচলিত ফসল। কৃষি বিভাগ আগ্রহী বাদাম চাষীদের সার্বিক সহযোগিতা করবে।