সান্তাহার সাইলোর ভারপ্রাপ্ত সুপারের সীমাহীন অনিয়ম-দূর্নীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন

38

সজীব হাসান, ( আদমদিঘী ) প্রতিনিধি: বগুড়ার সান্তাহার সাইলোর ভারপ্রাপ্ত সাইলো সুপারের সীমাহীন দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং শ্রমিকদের নায্য মজুরীর দাবীতে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে সাইলোর প্রধান ফটকের সামনে সান্তাহার সাইলোর ভুক্তভোগী ক্যাজুয়াল কর্মচারীরা এই কর্মসূচির পালন করে। এসময় সাইলোর সকল কর্মকান্ড বন্ধ রাখে কর্মচারীরা। ফলে সাইলোতে সকল প্রকারের পণ্য পরিবহনের কাজসহ সকল কিছুই স্থবির হয়ে পড়ে।
এসময় কর্মকর্মচারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সাজিদ হোসেন। তিনি বলেন সাইলো সুপার শাহরিয়ার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরীর অধিনে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সকল ধরণের বৈষম্য অনিয়ম, দমন, পীড়ন, মজুরী কম দেয়াসহ বিভিন্ন নির্যাতন বন্ধের দাবী জানান। সুপার নিজের পছন্দের ঠিকাদার না পাওয়ার কারণে লেবার হ্যান্ডলিং ঠিকাদার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করার কারণে শ্রমিকরা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। বর্তমানে কোনো হ্যান্ডলিং ঠিকাদার না থাকায় মাষ্টারোলের শ্রমিকদের দৈনিক মাত্র ১৭৫টাকার মজুরীতে কাজ করতে হচ্ছে। সুপারের এই রকম শত শত অনিয়ম আর দূর্নীতির বিরুদ্ধে দ্রুত কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আগামীতে আরো কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী প্রদান করা হয়।
এসময় বক্তারা সাংবাদিকদের কাছে সুপারের দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরে বলেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তমিজউদ্দিন এ্যান্ড বার্দাসকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য বিমানের টিকিটসহ আট লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তাকে কাজ না দিয়ে আরও অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে জয় কনষ্ট্রাকশনকে কাজ পাইয়ে দেয়। বিষয়টি জানাজানি হলে তমিজউদ্দিন এ্যান্ড বার্দাস তদন্ত কমিটির নিকট অভিযোগ দায়ের করেন। আমাদের করুন অবস্থার কথা সাইলো সুপারকে জানাতে গেলে তিনি কোন কথা না শুনে উল্টো চাকুরি থেকে বের করাসহ মামলার হুমকি প্রদান করেন। আমরা এই দুর্নীতিবাজ সাইলো সুপারের সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক তাকে দ্রত বিচারের আওতায় আনার জন্য জোর দাবী জানাচ্ছি। সেই সাথে আমাদের ন্যায়্য মজুরি থেকে কেটে নেওয়া পাওয়া বকেয়াসহ সমস্ত মজুরি টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য আপনাদের মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট জোরালো দাবী জানাচ্ছি। কর্মসূচি শেষে সাইলোর ভিতরে কর্মচারী ও সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে না দিতে প্রধান ফটকে তালা দেয়া হয়। পরে বিক্ষুদ্ধ কর্মচারীরা সাইলোর অপর গেটের তালা ভেঙ্গে প্রবেশ করে এবং সুপারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে বাধা প্রদান করা হয়। এসময় বিক্ষুদ্ধ শতাধিক কর্মচারী সুপারের কার্যালয়ে কথা বলার জন্য প্রবেশ করতে গেলে বাধা প্রদান করা হলে সেখানে চরম হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে সুপারকে তা কার্যালয়ে প্রায় তিনঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাইলোর এক কর্মচারি ক্ষোভের সঙ্গে জানান, আমার ৩০ বছরের চাকরি জীবনে এই রকম দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা পাইনি। তিনি সব সময় আত্মঅহংকার নিয়ে থাকেন। কোনো কর্মচারিকে তিনি মূল্যায়ন করেন না। আর যারা মাস্টার রোলে চাকরি করছেন, তাদের কথা বাদই দিলাম। এই বিষয়ে সাইলো অধীক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শাহরিয়ার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরীর কাছে গেলে তিনি অফিস কক্ষের বাহিরে এসে বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কেন কথা বলতে হবে বলে তিনি দরজা বন্ধ করে দেন। পরে আবার যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি অশালীন ব্যবহার করেন। উল্লেখ্য, বর্তমান সাইলো অধীক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) শাহরিয়ার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম সাইলোতে রক্ষন প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় কর্তব্যে অবহেলা, অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন।