সৌদি আরব ও আমিরাতের কাছে অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র

153

অনলাইন ডেস্ক

সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। ক্ষমতার শেষের দিকে এসে এই অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তার যেসব পররাষ্ট্রনীতি উল্টে দিচ্ছে বাইডেন প্রশাসন তার মধ্যে এখন যুক্ত হলো এই অস্ত্র বিক্রি চুক্তি। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক বা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ চূড়ান্ত হয় অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের। এর পরপরই তিনি কড়া কড়া সব পদক্ষেপ নিচ্ছেন। এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন চীনের চাপ মোকাবিলার জন্য দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পাশে আছে তার দেশ। নিয়োগ পাওয়ার পর বুধবার তিনি সাংবাদিকদের সামনে তাৎক্ষণিক অগ্রাধিকার বিষয়ক ইস্যুগুলো নিয়ে কথা বলেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন নিউ ইয়র্ক পোস্ট।

অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, আরবের এই দুই দেশের কাছে অস্ত্র বিক্রির বিষয় পর্যালোচনা করে দেখতে হবে। দেখতে হবে এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক নির্দেশনা বা লক্ষ্য অনুসরণ করা হয়েছে কিনা। উল্লেখ্য, ৩রা নভেম্বর নির্বাচনের পর পরই অস্ত্র বিক্রির ঘোষণা দিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর অধীনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান হস্তান্তরের কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের, যার অর্থমূল্য প্রায় ২৩০০ কোটি ডলার। অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের বিক্রি করা এসব অস্ত্র সংযুক্ত আরব আমিরাত ও সৌদি আরব ব্যবহার করবে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন ইয়েমেনের যুদ্ধে। এই যুদ্ধে সামনের সময়গুলোতে আরো বেসামরিক মানুষ মারা যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করে গেছে। এ বিষয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্লিঙ্কেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা জরুরি ভিত্তিতে এবং নিবিড়ভাবে এসব বিষয় পর্যালোচনা করবো। উল্লেখ্য, হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কঠোর অবরোধ আরোপ করেছে। সমালোচকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, এই গ্রুপের কারণে ইয়েমেনে মানবিক সঙ্কট আরো তীব্র হতে পারে। ব্লিঙ্কেনের মতে, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্ক বিস্তৃত পরিসরে পর্যালোচনা করা হবে।
প্রায় এক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও তালেবানদের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ চুক্তির অনেক গভীরে প্রবেশ করতে চায় বাইডেন প্রশাসন। ব্লিঙ্কেন বলেছেন, আমাদেরকে আসলেই বুঝতে হবে যে, এই চুক্তিতে কি আছে। তারপর প্রশাসন চিন্তা করবে কিভাবে সামনে অগ্রসর হওয়া যায়। এই চুক্তির অধীনে এ বছরের মে মাসের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনাকে প্রত্যাহার করে নেয়ার কথা বলা হয়। প্রায় ২০ বছর ধরে এসব সেনা আফগানিস্তানে যুদ্ধ করছে।
তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূত ছিলেন জালমে খলিলজাদ। তাকে শান্তি আলোচনার একই পদে অবস্থানের আহ্বান জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। ব্লিঙ্কেন বলেছেন, তাকে তার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে অব্যাহত থাকা উচিত, যাতে তিনি আরো ভাল কাজ করতে পারেন।
ওদিকে ইরান ইস্যুতে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ইরান ইস্যুতে দেয়া অবরোধ শিথিল করার জন্য প্রস্তুত বাইডেন প্রশাসন। এই অবরোধ আরোপ করেছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।