পৌর পিতা নয় জনগণের সেবক হয়ে থাকতে চাই” – জানে আলম খোকা

366

মোঃজাকির হোসেন,

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি

পৌর পিতা নয়, জনগনের সেবক হতে চান শেরপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র জানে আলম খোকা।

বগুড়া জেলার শেরপুর পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী জানে আলম খোকা বলেছেন, ‘পৌরসভার উন্নয়ন ও নাগরিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য, পৌর পিতা নয়, পৌর মেয়র নয় জনগণের সেবক হতে চাই।

পিতা মরহুম গাজীউর রহমান শেরপুর পৌরসভার তৎকালীন নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। পৌর চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ১৯৮০সালে আততায়ীর হাতে নিহত হন তিনি। এর পরেই বি এন পি’র সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন জানে আলম খোকা। পিতার আদর্শ, জনগনের সেবায় এবং দলীয় কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা ছিল এই নেতার। বিএনপিকে প্রতিষ্ঠা করতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন জানে আলম খোকা। পরবর্তীতে পৌর মেয়র নির্বাচিত হলেন এবং ২০১৮ সালে পৌর মেয়রের পদ থেকে পদত্যাগ করে বিএনপি’র দলীয় মনোনয়ন পেয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসলে দলের অভ্যন্তরীন চক্রান্তে পরাজিত হন বলে তিনি জানান। বি এন পি’র কান্ডারী নামে খ্যাত এই নেতা দলকে আগলে রেখেছে নিজের বুকের আড়ালে অথচ চক্রান্তে বঞ্চিত হয়েছে বারবার। আসন্ন নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হয় জনসাধারণের চাহিদার প্রেক্ষিতে জগ প্রতিক নিয়ে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হয়েছেন জানে আলম খোকা।
তিনি বলেন, জনগণ এর পূর্বেও পৌরসভা নির্বাচনে আমাকে ভোট দিয়ে পৌর মেয়র বানিয়েছিলেন। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে জনগণের কল্যাণে সবসময় কাজ করেছি। আজীবন জনগণের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য পদত্যাগ করেছিলাম। মামলা হামলার কারণে পরবর্তীতে নির্বাচন করা হয়ে ওঠেনি।
জয়ের ব্যপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি আরও বলেন, আগামী ১৬ জানুয়ারি পৌরবাসী জগ প্রতিকে আবারও ভোট দিয়ে আমাকে নির্বাচিত করার মাধ্যমে সবধরনের নাগরিক সুবিধা সম্পন্ন একটি পৌরসভা গড়ার সুযোগ দিবেন, ইনশাআল্লাহ। মেয়র পদ প্রার্থী জানে আলম খোকা আরও বলেন, সাধারণ মানুষের জন্যই আমি রাজনীতি করি। শেরপুর পৌরসভার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সাধারণ মানুষের যে ভালবাসা পেয়েছি তাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া।

সরেজমিনে ঘুরে ভোটারদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা যায় বিগত পাঁচ বছরে পৌর সভায় উন্নয়নের কোন আচর পড়েনি। পৌর এলাকার লাইট পোস্টগুলোতে নেই আলোর ব্যবস্থা। রাস্তাঘাট রিক্সা চলার অনুপোযোগী। দুটি ওয়ার্ডে শুকর এবং কুকুরের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ জনজীবন। নেই ভালো ড্রেনেজ ব্যবস্থা।

জগ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী জানে আলম খোকা জানান পৌরবাসী আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমাকে নির্বাচিত করলে আমি নাগরিক অধিকার নিশ্চিতকরনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। মাদকমুক্ত পৌর এলাকা এবং পরিচ্ছন্ন শহর করতে বদ্ধপরিকর আমি।
১৮৭৬ সালে স্থাপিত দেশের অন্যতম পুরাতন পৌরসভা বগুড়ার শেরপুর। ১০.৩৯৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের শেরপুর পৌরসভার মেয়র ও ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৬ জানুয়ারি শনিবার। ১১ টি কেন্দ্রে গোপন ব্যালটে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন অফিস।
নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী চার প্রার্থী হলেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুস সাত্তার (নৌকা), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত প্রার্থী স্বাধীন কুমার কুন্ডু (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী (বিএনপি থেকে বহিস্কৃত) জানে আলম খোকা (জগ) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী এমরান কামাল ইমরান (হাতপাখা)। এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের ৩টি পদে ১০ জন এবং ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন সর্বমোট ৫০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

শেরপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রির্টানিং অফিসার মোছা. আছিয়া খাতুন জানান, শেরপুর পৌরসভায় ১১ টি ভোট কেন্দ্র গোপন ব্যালটের মাধ্যমে সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ করা হবে। এজন্য ১১ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৮২ জন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও ১৬৪ জন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৩ হাজার ৭ শ ৫৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১১ হাজার ৪শ১৫ জন এবং নারী ভোটার ১২ হাজার ৩শ৩৯ জন।
তিনি আরো জানান, নির্বাচনে আচরণ বিধি বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে ৩জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া ভোটকেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। শান্তিপুর্ণ ও উৎসব মুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।