বগুড়ায় নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছে মাদকের অভয়ারণ্য!! পর্ব-১

223

রাকিব শান্ত ও আশিক সুজনঃ বগুড়ায় মাদক ব্যবসা রমরমা করতে মাদক কারবারিরা নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছে একের পর এক মাদকের অভয়ারণ্য। এসব মাদক কারবারিরা দিনে দিনে ফুলে ফেপে উঠে একটা প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করছে।

ধারাবাহিকভাবে আমরা প্রতিটি ওয়ার্ড এর মাদক ব্যবসা ও এর সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সকলের মুখোশ খুকে ফেলবো। তারই ধারাবাহিকতায় আজ পৌরসভার ০১ নং ওয়ার্ড এর মাদক ব্যবসার চিত্র তুলে ধরা হলো।

স্থানীয়রা জানান, পূর্বে ওয়ার্ড এর শাহ পাড়া, ঘোন পাড়া, গোয়ালগাড়ি, সুলতানগঞ্জ পাড়া ঈদগাঁ লেন এর কিছু কিছু চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী দাপটের সঙ্গে তাদের ব্যবসা চালিয়ে গেলেও এখন প্রায় অন্যান্য স্থানে বাসা-বাড়িতে মাদক লেনদেন বন্ধ থাকলেও সুলতানগঞ্জ পাড়ার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী পরিবার অতি লোভের আসায় এখন এই ব্যবসা ছাড়তে পারেনি। সুলতানগঞ্জ পাড়ার তুহিন শেখ এর বাড়িতে মাদকের জন্য যুবসমাজ দলে দলে হাজিরা দিচ্ছে, এমন কথায় জানান স্থানীয়রা।

বগুড়ার মাদকাসক্ত যুবকদের অতি পরিচিত প্রিয়জন, প্রয়োজন একাধিক মাদক মামলার আসামী দীপ্তি শেখ, যিনি বর্তমানে পলাতক। এখন তারই বড় ভাই তুহিন শেখ অধিক মুনাফার মাদক ব্যবসা রমরমা করতে নিজ বাড়িতে মাদকের অভায়ারণ্য গড়ে তুলেছে। দিনের পর দিন মোটরসাইকেলে আশা যুবকসহ বিভিন্ন বাহনে মাদকে আসক্ত যুব সমাজ এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচলে বিরম্বনার সৃষ্টি করছে, পাশাপাশি পাড়ার নারীদের পড়তে হচ্ছে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি এসব কথা বলেন, একজন নারী প্রতিবাদী পাপড়ি (ছদ্মনাম)।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলাকার কিছু রাজনৈতিক দলীয় কর্মীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় তুহিন শেখ নির্ভয়ে তার এই অবৈধ্য ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন৷ এই বিষয়ে স্থানীয় দলীয় কর্মীদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, এসব ব্যাপারে তারা কিছুই জানেনা। তুহিন শেখ নিজের স্বার্থের জন্যে অন্যান্যদের নামে মিথ্যা বানোয়াট কথা রটিয়ে বেড়াচ্ছে।
তুহিন শেখের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেই তার দেখা পাওয়া যায়নি।

এই বিষয়ে ১ নং ওয়ার্ড এর কাউন্সিলর সৈয়দ সার্জিল আহমেদ টিপু’র কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান যে, তিনি দায়িত্ব নেবার পরে সুলতানগঞ্জ পাড়া, ঘোনপাড়া সহ তার এলাকার ২/১ জায়গায় এসব মাদক কারবারির আনাগোনা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলো। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে পুলিশ প্রশাসন সহ তারা জনগণের স্বাস্থ্যসেবার দিকে বেশি মনোযোগী হওয়ায় এবং আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের ব্যস্ততার কারণে এই সুযোগে কিছু পুরনো মাদক কারবারি গোপনে তাদের পুরনো মাদক ব্যবসা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে তিনিও শুনতে পাচ্ছেন। তিনি অতি দ্রুতই এই বিষয়ে প্রশাসন কে সাথে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতির বাস্তবায়নে মাঠে নামবেন।

বগুড়ার উপশহর ফাঁড়ীর অফিসার ইনচার্জ নূর উদ্দিন জানান, দীপ্তি শেখ একাধিক মাদক মামলার আসামি সে এখন পলাতক। তিনি আরো জানান, অনুসন্ধান করে তার বড় ভাই তুহিন শেখ এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করেছে। সেই হিসেবে কাজও শুরু হয়েছিলো। কিন্তু ক্ষমতাসীন কিছু লোভী মানুষের হস্তক্ষেপ ও পরোক্ষ সহায়তায় বারবার পুরাতন ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন পদ্ধতিতে ও নতুন নতুন মানুষদের মাধ্যমে এই ব্যবসা চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, পৌরসভার ০১নং ওয়ার্ড কে শিক্ষা বেষ্টিত এলাকা বলা হয়। কারন এখানে বগুড়ার কিছু স্বনামধন্য স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, কোচিং সেন্টার রয়েছে। যার ফলে এখানে প্রায় সারাদিনই হাজার হাজার কোমলপ্রাণ ছাত্র-ছাত্রীদের আনাগোনা দেখা যায়। এসব ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেও প্রশাসনের এই ব্যাপারে উপযুক্ত হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকবৃন্দ।

তারা আরো জানায়, পৌরসভার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও যুবসম্প্রদায় কে মাদকের ভয়াল গ্রাস থেকে রক্ষা করতে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিবে। পৌরসভা বাসীর এখন এমনটিই প্রত্যাশা।