শেয়ারবাজারে ধস, টিকে থাকল শুধু বীমা

305

স্টাফ রিপোর্টারঃ

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) দেশের শেয়ারবাজারে এক প্রকার ধস নেমেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। ফলে বড় পতন হয়েছে সবকটি মূল্য সূচকের। তবে এই ধসের মধ্যেও দাম বেড়েছে বেশিরভাগ বীমা কোম্পানির। এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই একের পর এক বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়তে থাকে। তবে বিপরীত চিত্র দেখা দেয় অন্যান্য খাতে। একের পর এক ব্যাংক, প্রকৌশল, বস্ত্র, ওষুধ, আর্থিক খাত কোম্পানির দরপতনের সঙ্গে দাম কমতে থাকে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর। ফলে সূচকও নিম্নমুখী হয়ে পড়ে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে পতনের মাত্রা। শেষ আধাঘণ্টার লেনদেনে কিছু বীমা কোম্পানিও পতনের তালিকায় নাম লেখায়। এতে এক প্রকার ধস দিয়ে শেষ হয় দিনের লেনদেন। অবশ্য এই ধসের মধ্যেও অর্ধেকের বেশি বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৬টি বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ১৭টির। আর পাঁচটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্ধেকের বেশি বীমা কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) একটি নির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
গত বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) এক নির্দেশনা জরি করে আইডিআরএ সাধারণ বীমা কোম্পানির এজেন্ট কমিশন বাতিল করে দেয়। এ নির্দেশনায় বলা হয়, সাধারণ বীমা খাতে ব্যবসা অর্জন বা সংগ্রহের বিপরীতে বীমা এজেন্ট কমিশন ১৫ শতাংশের পরিবর্তে শূন্য শতাংশ হবে।
বেশিরভাগ বীমা কোম্পানির দাম বাড়ার মধ্যেই ডিএসইতে দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম। বিপরীতে দাম বেড়েছে মাত্র ৪৩টির। আর ৮৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৪২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫০৪ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৮২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৯১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ২৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্য সূচকের বড় পতন হলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৭১ কোটি ৫২ লাখ টাকা। যা আগের দিন ছিল ৭১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৫৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ১২৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর ৮৩ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৪৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে ডিএসইতে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- রবি, বেক্সিমকো ফার্মা, মিথুন নিটিং, বিডি ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, সামিট পাওয়ার এবং এনার্জিপ্যাক পাওয়ার। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৪১৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি ২ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেয়া ২২৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫১টির এবং ৪৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।