ওয়ারিশ গণ্য ও ভরণপোষণের আদেশ

১৩ বছর পর স্বীকৃতি পেল সন্তান, ধর্ষকের যাবজ্জীবন

133

অনলাইন ডেস্ক

রংপুরে পীরগাছায় ধর্ষণের ফলে সন্তান জন্মদানের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ধর্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে সন্তানকে ওয়ারিশ গণ্যসহ ভরণপোষণ দেওয়ার আদেশ দেন বিচারক। আজ সোমবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত শফিকুল ইসলাম রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে।

মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, পীরগাছার অন্নদানগর গ্রামের দিনমজুর হানিফ উদ্দিনের মেয়েকে (তখন ১৪ বছর বয়স) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়েন প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম (তখন ২২ বছর বয়স)। এরই একপর্যায়ে ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবর বিকেলে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন শফিকুল। পরে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ ঘটনায় মেয়েটি সন্তানের স্বীকৃতি দাবি করলে অস্বীকার করেন শফিকুল। নিরুপায় হয়ে মেয়েটি থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন।

পরবর্তীতে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ২০০৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মেয়েটি নিজে বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলায় শফিকুলসহ তার বাবা মজিবর রহমান, চাচা মমতাজ উদ্দিন ও ফুফু নজিরনকে আসামি করা হয়। ২০০৮ সালের ৪ আগস্ট একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ওই কিশোরী।

আদালতের নির্দেশে ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুর এবং ধর্ষকের ডিএনএ পরীক্ষা ও ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে দীর্ঘ ১৩ বছর পর এ রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে চাচা মমতাজ উদ্দিন ও ফুফু নজিরনকে খালাস দেন বিচারক। মামলা চলাকালীন অবস্থায় শফিকুলের বাবা মজিবর রহমান মারা যান।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, শফিকুলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ধর্ষকের ওয়ারিশ হিসেবে ঘোষণা করে সম্পত্তির অংশীদারিত্ব দেওয়ার রায় দিয়েছেন বিচারক। যদি ধর্ষকের কোনো সম্পত্তি না থাকে তাহলে রাষ্ট্রকে দায়িত্ব গ্রহণের আদেশ দেওয়া হয়।